রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নয়নে সরকার আন্তরিক : মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা

স্টাফ রিপোর্টার, কল্যাণপুর, ৩ আগস্ট।।চিকিৎসকদের পেশা একটা মহৎ পেশা। চিকিৎসকদের প্রতি জনগণের একটা সম্মানবোধ থাকতে হবে। অনেক সময় হাসপাতালে চিকিৎসক ও রোগীদের পরিবারের মধ্যে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়।

যা কোনভাবেই কাম্য নয়। চিকিৎসক এবং রোগীদের সম্পর্ক আরও মধুর হতে হবে। কারণ জন্ম বা মৃত্যু উভয় ক্ষেত্রেই শংসাপত্র দিয়ে থাকেন চিকিৎসকগণ। আজ কল্যাণপুর সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নবনির্মিত ভবন এবং স্টাফ কোয়ার্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা।

এদিন সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন ও স্টাফ কোয়ার্টার উদ্বোধন উপলক্ষে কল্যাণপুর বাজারে সোনারতরি মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নয়নে সরকার আন্তরিক। শুধু ঘটা করে হাসপাতালের উদ্বোধন করলেই হবে না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে হাসপাতালের পারিপার্শিক পরিমন্ডলকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

তিনি বলেন, হাসপাতাল একটা মন্দিরের মতো। কারণ মানুষের শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে হাসপতালে গিয়েই নিরাময় করতে হয়। তাই হাসপাতালকে মন্দিরের মতোই পবিত্র রাখতে হবে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের উপর আস্থা রাখতে হবে রোগী এবং তাদের পরিজনদের। বিশ্বাস রাখতে হবে তাদের পরিষেবার উপর। এক্ষেত্রে চিকিৎসক এবং রোগীদের মধ্যে সুসম্পর্ক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

একইভাবে রোগীদের পরিষেবার জন্য চিকিৎসকদেরও নিজেদের পেশাগত দায়িত্ব উজার করে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে খুবই আন্তরিক। কারণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বাস্থ্য ঠিক থাকলেই মানুষের সবকিছু ঠিক থাকে।

মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন সকলের মিলিত প্রচেষ্টাতেই আমরা এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা আরও বলেন, রাজ্যে নেশা বিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছে সরকার। নেশা বিরোধী অভিযানে অভিভাবকদেরও এগিয়ে আসতে হবে। নেশা থেকে ছেলেমেয়েদের বিরত রাখতে অভিভাবকদের আরও এগিয়ে আসার আহ্বান রাখেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের সার্বিক বিকাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঐকান্তিক ভূমিকা নিয়েছেন। এদিকে রাজ্য সরকারও হাসপাতালগুলির পরিষেবার মান আরও উন্নয়নের জন্য ধারাবাহিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বর্তমানে দুটি মেডিকেল কলেজ, স্টেট হাসপাতাল ৬টা (অ্যালোপ্যাথি ৪টি, হোমিও ১টি ও আয়ুর্বেদিক ১টি) রয়েছে।

তিনি জানান, রাজ্যে একটি ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. রাধা দেববর্মা বলেন, কল্যাণপুর সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নবনির্মিত ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এই সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩০টি শয্যা রয়েছে। তাছাড়া স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা।

কল্যাণপুর সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার সরকারি মুখ্য সচেতক বিধায়ক কল্যাণী রায়, বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী, স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব ড. দেবাশিষ বসু খোয়াই জেলার জেলাশাসক এল টি ডার্নং, খোয়াই জিলা পরিষদের জিলা সভাধিপতি জয়দেব দেববর্মা, কল্যাণপুর সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সৌমেন গোপ, সমাজসেবী জীবন দেবনাথ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ১০০ শতাংশ কোভিড ভ্যাকসিনেশন সম্পন্ন করার জন্য গয়াংফার্ড হাইস্কুল, ঘিলাতলি বাজার হাইস্কুল, রখিয়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়কে সংবর্ধনা জানানো হয়। বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণপুর সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য জমিদাতা প্রয়াত যোগেশ ভট্ট াচার্যের ছেলে জগদীশ ভট্টাচার্যকেও সম্মানিত করেন।

আয়ুষ্মান কার্ডে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পাওয়া ২ ব্যক্তিকে অনুষ্ঠানে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে কল্যাণপুর সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলের জন্য ৫ হাজার টাকার একটি চেক মুখ্যমন্ত্রীর ডা. সাহার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?