রাজ্যে হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিকে সফল রূপ দিতে মুখ্যমন্ত্রীর গুরুত্ব আরোপ

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১ আগস্ট।। আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের প্রথম বর্ষের সাফল্য এবং দ্বিতীয় বর্ষের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা চূড়ান্ত করার জন্য আজ সচিবালয়ে রাজ্যস্তরীয় এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। পর্যালোচনা সভায় “হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা করা হয়।

‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচিকে সফল রূপ দেওয়ার জন্য যে সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তা রূপায়ণে প্রতিটি দপ্তরকে আরও আন্তরিকভাবে কাজ করার উপর মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা গুরুত্বারোপ করেন। সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের প্রথম বর্ষের সাফল্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।

তিনি জানান, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবকে সার্বিকভাবে সফল করার লক্ষ্যে ২ সদস্য বিশিষ্ট একটি রাজ্যস্তরীয় অ্যাপেক্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হলেন এই কমিটির চেয়ারম্যান। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা জানান, আজাদি কা অমৃত মহোৎসব ৫টি থিমের উপর ভিত্তি করে পালন করা হচ্ছে।

সেগুলি হল স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধারণা, সাফল্য, কার্যক্রম এবং সংকল্প। এই থিমগুলিকে নিয়েই ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২২ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত বিভিন্ন দপ্তরের ৪১২টি ইভেন্টে অনুষ্ঠান করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ৩৭২টি ইভেন্টে মোট ৩৫ হাজার ১৩টি অনুষ্ঠানের আয়োজন ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। এই সমস্ত অনুষ্ঠানের ফটোগ্রাফও amrit mahotsav.nic.in ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।

আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন ইভেন্ট এবং ফটোগ্রাফ amrit mahotsav.nic.in পোর্টালে আপলোড করার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে। যে সমস্ত দপ্তর তাদের অনুষ্ঠান ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে সেগুলিও পোর্টালে আপলোড করার জন্য মুখ্যসচিব জে কে সিনহা দপ্তরগুলির প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের দ্বিতীয় বর্ষের কর্ম পরিকল্পনা বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস জানান, আগামী সেপ্টেম্বর, ২০২ থেকে আগস্ট, ২০২৩ পর্যন্ত বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে ৩৬৮টি ইভেন্টের আয়োজন করা হবে।

উল্লেখযোগ্য ইভেন্টগুলির মধ্যে রয়েছে ৭৫টি সীমান্ত গ্রামকে ক্রান্তীবীরদের নামে নামাকরণ, ব্রহ্মকুন্ডতে সিধু মুর্মু ও কানহু মুর্মুর মূর্তি স্থাপন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সেতুকে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামে নামাঙ্কিতকরণ, মেগা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শান্তিরবাজারে ১০০০ মেট্রিকটন এবং গঙ্গানগরে ৫০০ মেট্রিকটন ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন খাদ্য গুদাম নির্মাণ, ইনভেষ্ট ত্রিপুরা’ সম্মেলনের আয়োজন ইতাদি। আজাদি কা অমৃত মহোৎসবকে প্রথম বর্ষে যে উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে পালন করা হচ্ছে তা দ্বিতীয় বর্ষেও বজায় রাখার উপর মুখ্যসচিব সভায় গুরুত্ব আরোপ করেন।

সভায় হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচির প্রস্তুতি বিষয়ে তথ্য দপ্তরের অধিকর্তা জানান, আগামী ১৩-১৫ আগস্ট, ২০২২ হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিকে সফল রূপ দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তর এই কর্মসূচিকে সফল করে তুলতে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিনি জানান, আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের জেলাগুলির মধ্যে ৫ লক্ষ ৩৭ হাজার জাতীয় পতাকা বিতরণের কাজ শেষ করা হবে।

জনগণ যাতে স্বল্পমূল্যে এই জাতীয় পতাকাগুলি কেনে তার জন্য সচেতনতামূলক প্রচার অভিযানও সংগঠিত করা হচ্ছে। হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিকে সফল করতে রাজ্যের জনগণের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ভিডিও আপিল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করা হয়েছে।

এছাড়াও ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচি বিষয়ে হোর্ডিং, ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে, এফ এম চ্যানেলে প্রচার অভিযান চলছে, পোস্টার, টিমপ্লেট ইত্যাদি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে এবং এই কর্মসূচি সম্বন্ধিত অডিও ঘোষণা বাংলা ও ককবরকে সমস্ত জেলায় প্রচার করা হচ্ছে।

আজাদি কা অমৃত মহোৎসব এবং হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিকে সফল করতে এবং তা রাজ্যের প্রতিটি জনগণের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির প্রতি আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।

পর্যালোচনা সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সচিব, সচিব এবং অধিকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন এবং আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?