স্টাফ রিপোর্টার, সোনামুড়া, ২১ জুলাই।। গোটা দেশ এবং রাজ্যজুড়ে প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও গঠছে খুন সন্ত্রাস আত্মহত্যার মতন ঘটনা। কোন মতেই যেন থামতে চাইছে না এ ধরনের অপরাধমূলক ঘটনাগুলি। দেশের সঙ্গে রাজ্যেও এ ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জানা যায় গত বুধবার কাজের সূত্রে চেন্নাই এর উদ্দেশ্যে রওনা হয় ত্রিপুরা রাজ্যের এক মেয়ে। চেন্নাই গিয়ে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেন বলে খবর।
এই ঘটনায় গোটা এলাকায় রীতিমতো শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায় সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়া মহকুমার বক্সনগর ব্লক এর অন্তর্গত পুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা আবু তাহেরের কন্যা রিমা মায়া বেগম (৩০)। তাকে ইসলামিক রীতিনীতি মেনে ১২ বছর পূর্বে একই গ্রামের ৬ নং ওয়ার্ড এলাকার শাহজাহান মিয়ার সঙ্গে বিবাহ দেন তার পরিবার।
যথারীতি তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জন্ম নেয়। প্রথমত ভালোই চলছিল তাদের জীবন। কিন্তু সম্প্রতি দুই বছর পূর্বে পারিবারিক ঝামেলায় দুজনের মধ্যে বৈবাহিক বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তখন রিমা তার এক পুত্র সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসে। অপরদিকে স্বামী শাহজাহান এক পুত্র ও কন্যা সন্তানকে নিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করে নেন।
তখন রিমার বৃদ্ধ মা-বাবা ও এক পুত্র সন্তানকে নিয়ে অর্থনৈতিক মহাসংকটে পড়ে যায়। বাধ্য হয়ে রিয়া রোজগারের জন্য কাজের সূত্রে চেন্নাই চলে যায়।যথারীতি চেন্নাই জয়নগর স্থিত জীবন মিত্রা ফার্টিলাইটি সেন্টার নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সেবিকার সাহায্যকারী হিসেবে কাজ পান।এক বছর উল্লেখিত হাসপাতালে চাকরি করেন রিমা।
এক বছর চাকরি করার পর বাড়িতে ছুটিতে এসে তার ছোট বোনকে চেন্নাই কাজের জন্য সঙ্গে করে নিয়ে যান। প্রায় ছয় মাস কাজ করার পর হঠাৎ গতকাল বুধবার সকাল ১০টার সময় চেন্নাইস্থিত হাসপাতালের বারান্দায় মোটা রশি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে রিমা আত্মহত্যার করেন।
রিমার বাবা আবু তাহের সঙ্গে থাকা ছোট বোনের সঙ্গে এক টেলিফোনের সাক্ষাতে জানা যায় পারিবারিক বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ থাকায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে রিমা। অন্যদিকে গোপন সূত্রে জানা যায় মঙ্গলবার রাতে বিচ্ছেদ হওয়া স্বামীর সঙ্গে সন্তানদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি, ঝগড়া বিবাদ থেকে অভিমান করে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছেন।
তবে রিমার মৃতদেহ এখনো রাজ্যে আসেনি। রিমার পুটিয়াস্থিত পরিবার মহকুমা শাসক ও পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন রিমার মৃতদেহ বাড়িতে আনার জন্য। বর্তমানে রিমার মৃতদেহ চেন্নাইস্থিত কে ইলিভেন সিএমডি থানার অধীনে হাসপাতাল মর্গে রয়েছেন।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার জন্য চেন্নাই ও ত্রিপুরা প্রশাসন দৌড় ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে বলে খবর । এদিকে রিমার মৃতদেহ পুটিয়াস্থিত নিজ বাড়িতে আনার জন্য আত্মীয়স্বজনরা অধির আগ্রহ দেখাচ্ছে।