পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

অনলাইন ডেস্ক, ৮ জুলাই।। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই রুশ বাহিনীকে মোকাবিলায় বিপুল পরিমাণ সামরিক সহায়তা নিয়ে দেশটির পাশে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি দিন যত গড়াচ্ছে, পশ্চিমা সামরিক সহায়তার পরিমাণও ততই ভারী হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে পরাজিত করতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিন ‘যুদ্ধক্ষেত্রে’ রাশিয়াকে পরাজিত করার চেষ্টা করতে পশ্চিমা দেশগুলোকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনে মস্কোর হস্তক্ষেপ মূলত ‘বহু-মেরুর বিশ্বব্যবস্থার’ আবির্ভাবের সূচনা করেছে।

পুতিন বলেন, ইউক্রেনের এই যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি রাশিয়া খুব কমই শুরু করেছে এবং পশ্চিমাদের যুদ্ধে হারানোর মতো চেষ্টা করার সাহস দেখিয়েছে। এছাড়া মস্কো এখনও শান্তি আলোচনার জন্য দ্বার খোলা রেখেছে বলেও জোর দিয়ে বলেন তিনি।

ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক আগ্রাসনের চার মাসেরও বেশি সময় পার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রুশ পার্লামেন্টারি নেতাদের সামনে বক্তব্য দেওয়ার সময় পুতিন কটূক্তিপূর্ণ এই মন্তব্য করেন। বক্তৃতায় পুতিন বলেন, সংঘাত যত জোরালো হবে, যেকোনো আলোচনার সম্ভাবনা ততই ম্লান হয়ে উঠবে।

পুতিন বলেন, ‘আজ আমরা শুনছি যে, তারা (পশ্চিমা দেশগুলো) আমাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পরাজিত করতে চায়। আপনারা কি বলেন? তাদের (রাশিয়াকে পরাজিত করার) চেষ্টা করতে দিন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেকবার শুনেছি যে, শেষ ইউক্রেনীয় থাকা পর্যন্ত পশ্চিমারা আমাদের সাথে যুদ্ধ করতে চায়।

এটি ইউক্রেনীয় জনগণের জন্য একটি বিপর্যয়। তবে মনে হচ্ছে সবকিছুই ওই দিকেই এগোচ্ছে’। সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতিকে ধ্বংসের চেষ্টার এবং ইউক্রেনে উন্নত অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রক্সি যুদ্ধ চালানোর অভিযোগ করে আসছে মস্কো।

তবে যুদ্ধে অগ্রগতি অর্জন করা নিয়ে গর্বের পাশাপাশি সংকট অবসানে আলোচনার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেছেন পুতিন। পুতিন বলেন, ‘প্রত্যেকেরই জানা উচিত, সার্বিকভাবে আমরা এখনও আন্তরিকভাবে কিছুই শুরু করিনি।

একইসঙ্গে শান্তি আলোচনাও আমরা প্রত্যাখ্যান করছি না। তবে যারা এটি প্রত্যাখ্যান করছে তাদের জানা উচিত যে, এটি যত অব্যাহত থাকবে তাদের পক্ষে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা তত কঠিন হবে। ’ তিনি বলেন, এটা স্পষ্ট যে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার জন্য অসুবিধা তৈরি করছে।

কিন্তু ততটা নয় যতটা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপকারীরা ভেবেছিলেন’। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।

মস্কো অবশ্য ইউক্রেনে তাদের এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে। এছাড়া যুদ্ধের শুরুতে পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড আক্রান্ত হলেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মূল মনোযোগ এখন দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়। বিবিসি বলছে, রাশিয়া মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শিল্প এলাকা ডনবাস দখল করতে চাইছে।

এই ভূখণ্ডটি লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ক নামে দুটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত। সেখানে রুশপন্থি দুটি বিদ্রোহী স্ব-ঘোষিত রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

সম্প্রতি লুহানস্ক অঞ্চল পুরোপুরি দখলে নেওয়ার পর রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মূল মনোযোগ এখন দোনেৎস্ক অঞ্চলে। চলতি সপ্তাহে এই অঞ্চলের স্লোভিয়ানস্ক শহরে বেশ কয়েক দফায় হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?