অনলাইন ডেস্ক, ১ জুলাই।। ইউক্রেন যুদ্ধ যত গড়াচ্ছে, রাশিয়াও সেনাবাহিনীতে নানা কায়দায় ভর্তি বাড়াচ্ছে। যা নিয়ে দেশটির ভেতর অসন্তোষও শুরু হয়েছে।
রাশিয়ার নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে এক বছর বাধ্যতামূলকভাবে কাজ করতে হয়। ইউক্রেন যুদ্ধে এধরনের তরুণদের অল্প মেয়াদের চুক্তির ভিত্তিতে পাঠানো হচ্ছে। গোড়া থেকেই এমন ব্যক্তিদের যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি পেশাদার সেনা আছে।
বিভিন্ন বেসরকারি সেনা সংস্থা অথবা নিরাপত্তা সংস্থা থেকেও রাশিয়া যোদ্ধাদের সেনাবাহিনীতে ঢুকিয়েছে। এছাড়াও আছে, ডনবাস, লুহানস্ক, দোনেৎস্ক অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধারা। এদেরকেও যুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এতকিছুর পরেও রাশিয়া সন্তুষ্ট নয়।
তাই গোটা দেশজুড়ে নতুন করে সেনাবাহিনীতে ভর্তির নানা প্রক্রিয়া জারি করা হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রুশ নাগরিক জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন দেশের বাইরে আছেন। কিন্তু তার পাসপোর্টে এখনো রাশিয়ার ঠিকানা। অতীতে তিনি সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। সম্প্রতি তার ঠিকানায় একটি চিঠি গেছে। সেনার তরফে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, তিনি যেন দ্রুত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন।
তাকে দ্রুত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বলা হয়েছে। ওই সাবেক সেনা ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধী। তিনি জানিয়েছেন, দেশে থাকলে তিনি পালাতে বাধ্য হতেন। একাধিক সাবেক সেনা জওয়ানকে ফের সেনাতে যোগ দিতে বলা হচ্ছে। রাশিয়ার বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক গ্রুপে এই বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো আলোচনা চলছে।
এধরনের চিঠি এলে কীভাবে তা আটকানো যায়, তা নিয়ে সকলে আলোচনা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার একটি নারী গ্রুপের সদস্য এক মা জানিয়েছেন, তার ছেলেকে স্থানীয় প্রশাসনিক ভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাকে চুক্তিপত্র সই করতে বলা হয়েছিল। তবে শেষপর্যন্ত তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রাশিয়ায় সাধারণত ১৮ থেকে ২৭ বছরের তরুণদের বাধ্যতামূলকবাবে এক বছরের জন্য সেনায় যোগ দিতে হয়। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াতেও কারচুপি শুরু হয়েছে বলে একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের দাবি। কম বয়সিদেরও বাধ্যতামূলকভাবে সেনায় যোগ দিতে বলা হচ্ছে।
ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রদেরও পড়াশোনা বন্ধ করে সেনায় যোগ দিতে বলা হচ্ছে। সুস্থ ব্যক্তিদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন অফিসে লিস্ট পাঠিয়ে তাদের কর্মীদের বাধ্যতামূলকবাবে সেনায় যোগ দিতে বলা হচ্ছে। চেচনিয়াতে আরো ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে। সেখানে সেনাতে যোগ দিতে না চাইলে মারধর করা হচ্ছে।
গুম করে দেওয়া হচ্ছে। তরুণ এবং যুবকদের বাধ্য করা হচ্ছে অস্ত্র ধরতে। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গোটা রাশিয়ায়, এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার কর্মীরা।