অনলাইন ডেস্ক, ২৬ জুন।। শনিবার ভোর রাতে নরওয়ের রাজধানী অসলোর কেন্দ্রস্থলে বন্দুক হামলায় দুজন নিহত এবং ২১ জন আহতের ঘটনায় ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে হত্যা, হত্যার চেষ্টা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই হামলাকে পুলিশ ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদের কাজ’ বলে অভিহিত করেছে। হামলাকারী একজন ইরানি বংশোদ্ভুত নরওয়েজিয়ান নাগরিক। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোয়ের বিবিসিকে বলেছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে মে মাসে একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, কিন্তু সে সময় তাকে হুমকি হিসেবে গণ্য করা হয়নি।
শনিবার গভীর রাতে বিবিসির নিউজ আওয়ার অনুষ্ঠানে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখন তদন্তের ফলাফল দেখতে হবে’। অসলোর জনপ্রিয় এলজিবিটিকিউ+ ভেন্যু লন্ডন পাব, হের নিলসেন জ্যাজ ক্লাব এবং অন্য একটি পাব এর ভেতরে এবং পাশের এলাকায় এই বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। দ্য লন্ডন পাব নামের ক্লাবটি সমকামীদের কাছে জনপ্রিয় একটি পানশালা ও নাইটক্লাব।
স্থানীয় সময় শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি তার ব্যাগ থেকে একটি বন্দুক বের করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। হামলাকারীকে কিছুক্ষণ পরই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ অপরাধস্থল থেকে দুটি অস্ত্র উদ্ধার করে, যার মধ্যে একটি ছিল সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় বন্দুক।
ওই হামলায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। আর আহত ২১ জনের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। হামলার পর নরওয়েতে সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতা সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করা হয়েছে, যদিও দেশটির পিএসটি গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে, আরও হামলার সম্ভাবনা রয়েছে এমন ‘কোন ইঙ্গিত নেই’৷
সমকামীদের নিয়ে প্রতিবছর আয়োজিত ১০ দিনের গে প্রাইড প্যারেডের আগের রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটলো। শনিবার থেকে ওই প্যারেড শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই হামলার পর পুলিশের পরামর্শে তা বাতিল করা হয়েছে। তবে, শনিবার বিকালে শত শত লোক ঘটনাস্থলের কাছে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এসময় তারা চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘আমরা এখানে আছি, আমরা অদ্ভুত, আমরা অদৃশ্য হয়ে যাব না!’বার্তা সংস্থা এএফপিকে ৫০ বছর বয়সী এক নারী বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমি মনে করি এটা একটা চমৎকার ব্যাপার যে, এই মিছিল হচ্ছে, অন্যথায় হামলাকারী জিতে যেত’। হামলার ঘটনাস্থলের কাছে সমকামীদের প্রতীক রংধনু পতাকা এবং ফুল রাখা হয় এবং বিক্ষোভকারীরা একে অপরকে আলিঙ্গন করে সান্ত্বনা দেয়।
নরওয়ের পিএসটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, ওই হামলাকারী ২০১৫ সাল থেকেই ‘সন্দেহভাজন উগ্র ইসলামপন্থী’ হিসাবে পরিচিত ছিল এবং সে দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থও ছিল।