অনলাইন ডেস্ক, ২৬ জুন।। যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ক্ষমতা ছাড়ার আহবান সত্ত্বেও তিনি ২০৩৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চান।
যদিও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ব্রিটিশ রাজনীতিতে বরিস জনসন সম্প্রতি অনেকটা কোণঠাসা হয়ে গেছেন এবং তার পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।
গতকাল কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য সফরের শেষ দিনে রুয়ান্ডায় সাংবাদিকদের জনসন বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকার বিষয়ে সক্রিয়ভাবে চিন্তা করছি এবং আপনি জানেন, তখন কী হতে পারে। তবে যখন বিষয়টি সামনে আসবে তখন আমি এটি পর্যালোচনা করবো’।
তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া মানে তিনি ঠিক কী বোঝাতে চান, এমন প্রশ্নের জবাবে জনসন বলেন, ‘তৃতীয় মেয়াদ মানে হলো ২০৩০ এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত’। ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রী যদি আগামী দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে সক্ষম হন, তাহলে সেটি তাকে ব্রিটেনে গত ২০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নেতায় পরিণত করবে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে অনাস্থা ভোটে বিজয়ী হন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বেশ কয়েকটি কারণে জনসন চাপের মুখে ছিলেন, যার মধ্যে একটি বড় কারণ হচ্ছে কোভিড লকডাউনের সময় ডাউনিং স্ট্রীটে বিধিনিষেধ ভেঙ্গে পার্টি করতে দেওয়া। দলের মধ্যে হওয়া এই অনাস্থা ভোটাভুটিতে জনসনের পক্ষে ভোট পড়ে ২১১টি। বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৪৮টি।
এই ফলাফলের সুবাদে আগামী এক বছর ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলের মধ্যে থেকে আর কোনো ধরনের অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। চলতি মাসের শুরুতে কনজারভেটিভ পার্টির আইন প্রণেতাদের কাছে আস্থা ভোটে টিকে গেলেও তার দলেরই ৪১ শতাংশ সংসদীয় সহকর্মী জনসনকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
এছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করার জন্য বরিস জনসনের বিরুদ্ধে এখন তদন্তও চলছে। কনজারভেটিভ পার্টির নিয়ম অনুযায়ী, অনাস্থা ভোটে টিকে যাওয়ার পর দলীয় আইনপ্রণেতারা আগামী এক বছর বরিস জনসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন না।
তবে বিভিন্ন ইস্যুতে অপ্রতিরোধ্য অসন্তোষ বা একাধিক সিনিয়র মন্ত্রীদের পদত্যাগ জনসনের অবস্থানকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। এছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ব্রিটেনও কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গভীর জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটের মধ্যে রয়েছে। দেশটির মুদ্রাস্ফীতি গত ৪০ বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।
কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক নেতা মাইকেল হাওয়ার্ড শুক্রবার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরিস জনসনের এখন সরে যাওয়ার সময় হয়েছে। অন্যদিকে উপনির্বাচনে পরাজয়ের পরে পদত্যাগ করেছেন কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান অলিভার ডাউডেন।
তবে এতোকিছুর পরও বরিস জনসন বলছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদে তিনি তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্বপালন করতে চান। তার ভাষায়, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক বৈষম্য কমাতে, ব্রিটেনের আইনি ও অভিবাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার জন্য ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকতে চান তিনি।