অনলাইন ডেস্ক, ৬ জুন।। কলকাতা শহরে গান করতে এসে লাশ হয়ে ফিরলেন জনপ্রিয় গায়ক কেকে। তার মৃত্যু শোকে ভাসিয়েছে কোটি ভক্ত-অনুরাগীদের। তার অকাল প্রয়াণ যেন মেনে নিতে পারছেন না কেউ। উপমহাদেশের অনেক তারকাই কেকে’র জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। এবার সদ্য প্রয়াত এ গায়কের জন্য কলম ধরলেন কবীর সুমন। দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে কেকে’র প্রতি জানালেন নিজের স্নেহ ও সম্মান।
তৈরি করলেন নতুন একটি গানও। যা তিনি তৈরি করেছেন তারই জনপ্রিয় গান ‘এ তুমি কেমন তুমি’র আদলে। বলে রাখা ভালো, এই গানটি ‘জাতিস্মর’ সিনেমায় গেয়েছিলেন রুপঙ্কর বাগচী। যিনি এরইমধ্যে কেকে’র সমালোচনা করে নিজেই সমালোচনার মুখে আছেন। কবীর সুমন ফেসবুকে লেখেন, ‘এ তুমি কেমন তুমি’ গানটি কোনও ছবির জন্য বানাইনি। বানিয়েছিলাম একটি মেয়ের জন্য, একটি বিশেষ ছবির সাউণ্ডট্র্যাকে ব্যবহার হওয়ার ঢের আগে, অনেক আগে, ২০০৫ সালের এক গভীর রাতে, ফোনে মেসেজ করে করে।
কোনও খাতায় বা পাতায় লিখিনি। হঠাৎ লিখতে শুরু করেছিলাম আমার ফোনে সরাসরি, আমার বুকে যত কান্না ধরা সম্ভব নয় তার চেয়েও বেশি কান্না নিয়ে, কীপ্যাড টিপে টিপে মেসেজ করে করে। তারপর সুর। এক পরিচালক আবদার করে চেয়ে নেন গানটি তাঁর ছবির জন্য। স্নেহের জায়গা থেকে দিয়ে দিয়েছিলাম। গানটি নাম করে গিয়েছে। ছায়াছবিতে গানটি যে সুকন্ঠী বাঙালি গায়ক গেয়েছিলেন তিনিও।
যাঁর জন্য গানটি (হুবহু একই কথায় একই সুরে) নির্মাণ করেছিলাম এবং গানটি যাঁকে প্রথম শুনিয়েছিলাম সেই মেয়েটি নিশ্চই চুপিচুপি হেসেছেন। হয়তো আজও হাসেন। নাকি এই শহরে আমার চেয়ে কুড়ি বছরের ছোট এক গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর আমার মতো তিনিও লুকিয়ে কাঁদেন। আমি শান্তি পাচ্ছি না। কিছুতেই না। শান্তি খুঁজতে খুঁজতে আজ আমি গানটার কথা, লিরিক পাল্টাতে শুরু করলাম।
ঐ সুরে ছন্দে এই লিরিক সমান উপযুক্ত। অনেক বছর আগে এক রাতে আমি যেমন ফোনের কীপ্যাড টিপেটিপে একটি গান মেসেজ করে করে পাঠিয়েছিলাম একটি মেয়েকে আজ তেমনি কীপ্যাড টিপেই ঐ গানের সুরের ওপর নতুন কথা বসিয়ে দিলাম। এই গানটি আমি নিজে প্রথমে গাইব। আর কাউকে দেবো না। আগে আমি গাইব, তারপর ‘কপিলেফট’ – মোল্লা সুমনের গান যিনিই গাইতে চান গাইবেন – শুধু এই সুর ছন্দ লিরিক অবিকৃত রেখে-
এ কেকে কেমন কেকে এই শহরে মরতে আসে
জেনে নাও কৃষ্ণকুমার এ-গান তোমায় ভালবাসে।
তোমাকে চিনতাম না জানতাম না তুমি এমন
আমার এই গানের সুরে হঠাৎ পাওয়া কান্না যেমন
শেষ গান গাইছ মৃত্যু দাঁড়িয়ে আছে তোমার পাশে –
এসেছো আগেও তুমি হয়তো হয়ে ছদ্মবেশী
কোনও এক জন্মে তুমি ছিলে আমার প্রতিবেশী।
এ শহর তোমারও ঘর তোমার শহর তোমার মাটি
বাংলার লক্ষ ছেলেমেয়ের বুকে তোমার ঘাঁটি
ফিরবে তাদের কাছেই কলকাতাতেই ফিরে এসে।’