অনলাইন ডেস্ক, ২ জুন।। পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান সতর্ক করেছেন যে, শীঘ্রই নতুন নির্বাচনের ঘোষণা না আসলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে।
বুধবার (২ জুন) পাকিস্তান বোল নিউজ নামের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, আমরা দেখবো যে তারা আমাদের আইনি ও সাংবিধানিক উপায়ে নির্বাচনের দিকে যেতে দেয় কি না। তা না হলে এই দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাবে।
ইমরান আরও বলেন, বর্তমান সংসদে ফিরে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ এর অর্থ হচ্ছে, তার সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র স্বীকার করে নেওয়া।
তিনি বলেন, আজাদি মার্চে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য তার দলের আবেদনের বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন। পরবর্তী সমাবেশ কবে অনুষ্ঠিত হবে সে ঘোষণাও সামনে আসছে বলে জানান তিনি।
এই পিটিআই প্রধান স্বীকার করেছেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পুরোপুরি ক্ষমতা উপভোগ করতে পারেননি। তিনি এই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, দেশের ক্ষমতার প্রকৃত কেন্দ্র অন্য কোথাও রয়েছে এবং সবাই জানে যে এটা কোথায়।
ওই সাক্ষাৎকারে ইমরান খানের সরকার উৎখাতে পার্লামেন্টে আনা অনাস্থা ভোটের রাতের ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। ইমরান খান বলেন, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তার সরকার ‘দুর্বল’ ছিল। আর সেকারণেই তাদের জোটসঙ্গী খুঁজতে হয়েছিল। তবে এরকম পরিস্থিতি আবার দেখা দিলে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠনে নির্বাচন বেছে নেবেন বলেও জানান ইমরান খান।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান বলেন, ‘আমাদের হাত বাধা ছিল। সব জায়গা থেকে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিলো। ক্ষমতা আমাদের সঙ্গে ছিল না। সবাই জানে পাকিস্তানের ক্ষমতা কোথায় থাকে, ফলে আমাদের তাদের ওপর নির্ভর করতে হতো’।
ইমরান বলেন, ‘আমরা সব সময়ই তাদের ভরসা করেছি। তাদের অনেক কিছু ভালো আছে তবে তাদের করা উচিত ছিল এমন অনেক কিছুই তারা করেনি। তাদের ক্ষমতা আছে কারণ তারা এনএবি (ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো) এর মতো প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করে, এগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না’।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রতি ইঙ্গিত করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, রাষ্ট্রের এই প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানটি যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে তার দেশ ভেঙে তিন ভাগ হয়ে যাবে।
পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে তার দেশ আত্মহত্যার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে। তার দেশ খেলাপি হওয়ার দিকে যেতে পারে।
ইমরান খান বলেন, ‘যদি এস্টাবলিশমেন্ট (পাকিস্তান সেনাবাহিনী) সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে আমি আপনাকে লিখে দিতে পারি, তারা ধ্বংস হবে (পাকিস্তান ও এস্টাবলিশমেন্ট)। সশস্ত্র বাহিনীই প্রথমে ধ্বংস হবে’।
পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, ’দেশ ধ্বংস হলে সেটি খেলাপি হবে। তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাকিস্তানকে পরমাণুনিরস্ত্রীকরণের কথা বলবে। ঠিক যেমনটা গত শতকের নব্বইয়ের দশকে ইউক্রেনকে নিরস্ত্র করা হয়েছিল’।