অনলাইন ডেস্ক, ১৯ মে।। ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতবর্ষ। সংবিধান প্রতিটি ভারতীয় নাগরিককে তার নিজস্ব ধর্মাচারণ, খাদ্যাভাসের অধিকার দিয়েছে। অথচ মধ্যাহ্ন ভোজে গোমাংস এনেছিলেন এই অভিযোগে বলে কপালে হাজতবাস জুটল অসমের একটি সরকারি স্কুলের প্রধানা শিক্ষিকার। যে রাজ্যের শাসক দল বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। নিজের পছন্দমাফিক খাবার খাওয়ারও কি স্বাধীনতা নেই এই দেশে? যার জন্য একজন শিক্ষিকাকে জেলে যেতে হয়। অসহিষ্ণুতা কোন পর্যায়ে গেলে এই ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব। বলছেন ওয়াকিবহাল মহল।
ঘটনার শুরু গত সোমবার। গোয়ালপাড়া জেলার সরকারি স্কুলে মধ্যাহ্ন ভোজে গো মাংস আনেন ওই শিক্ষিকা এমনটাই অভিযোগ। তারপর সবার সঙ্গে বসেই আহার সারেন তিনি।প্রকাশ্যে গোমাংস খাওয়ায় বেশ কিছু সহকর্মীর ভাবাবেগে আঘাত লাগে বলে অভিযোগ। তাঁরা আপত্তি তোলেন। স্কুল পরিচালন কমিটি এরপরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
৫৬ বছর বয়সি ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ১৫৩ এ ধারা ( ধর্ম, জাতপাত, জন্মস্থান, বসবাসের কারণে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা তৈরি), ২৯৫এ ধারায় (কোনও ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করার উদ্দেশে বারবার কৃত কোনও কাজ) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।এরপরেই গ্রেফতার করা হয় ওই শিক্ষিকাকে।
স্কুল পরিচালন কমিটি জানিয়েছেন সবার মাঝে বসে এইভাবে গোমাংস খাওয়ার জন্য ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। এই আচরণ অত্যন্ত আপত্তিজনক তাই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা কয়েকদিন আগেই গোমাংস খাওয়া বন্ধের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন।
তিনি বলেন “গরু আমাদের মা। যেখানে গরুকে পুজো করা হয় সেখানে গোমাংস না খাওয়াই ভাল। তবে একসঙ্গে্ সকলের একধাক্কায় অভ্যেস বদলে ফেলার দরকার নেই।” এবার তাঁর রাজ্যেই গোমাংস আনার অপরাধে হাজতবাস করতে হচ্ছে প্রৌঢ়া শিক্ষিকাকে।
কয়েকদিন আগেই গরু জবাই করা হয়েছে এই অভিযোগে উত্তরপ্রদেশে মেয়ের বিয়ের আসরে মা কে গুলি করে হত্যা করা হয়। এবার আরও এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে একই ঘটনার পুনরবৃত্তি হল ।