আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি:‘আমরা দুষ্টু নারীদের ঘরে রাখতে চাই’

অনলাইন ডেস্ক, ১৯ মে।। নারী অধিকার নিয়ে যেসব নারী সোচ্চার, তাদেরকে ‘দুষ্ট নারী’ বলে উল্লেখ করে আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি বলেছেন, ‘আমরা দুষ্টু নারীদের ঘরে রাখতে চাই’।

নিজের এই মন্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘এটা আসলে ঠাট্টা। যেসব নারী অন্য কোনো পক্ষের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে বর্তমান সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে চায়- তাদেরকেই ঠাট্টা করে দুষ্টু নারী বলেছি আমি’।

সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান গোষ্ঠীর অন্যতম জেষ্ঠ্য এই নেতা।

তালেবান গোষ্ঠীর পাশাপাশি একই সঙ্গে এ গোষ্ঠীর সহযোগী বাহিনী হাক্কানি নেটওয়ার্কেরও শীর্ষ নির্দেশদাতা সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা ও তাদের আফগান সহযোগীদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেসবের কয়েকটির জন্য দায়ী এই হাক্কানি নেটওয়ার্ক।

এসব হামলার জন্য কয়েক বছর আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড আসামির তালিকায় নাম উঠেছে হাক্কানির। তাকে গ্রেপ্তার বা গ্রেপ্তারে সহায়ক হতে পারে, এমন তথ্যের জন্য ১ কোটি ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করেছে এফবিআই।

২০২১ সালের মার্চে আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওই বছর আগস্টের মধ্যে দেশটি থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। এরপর মাত্র চার মাসের মধ্যে ত্বরিৎ গতিতে দেশের ক্ষমতা দখল করে তালেবানরা। ২০০১ সালে এই মার্কিন বাহিনীর অভিযানেই ক্ষমতা হারিয়েছিল তালেবানরা।

কট্টর ইসলামপন্থী তালেবান গোষ্ঠী বরাবরই নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও অধিকারের ঘোর বিরোধী। ১৯৯৬ সালে যখন তারা প্রথম দফায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছিল, সেই মেয়াদে কেবল প্রাথমিক শিক্ষার দুয়ার খোলা ছিল আফগান নারীদের জন্য।

বর্তমানেও একই অবস্থা চলছে দেশটিতে। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান বাহিনী কাবুল দখল করে নেওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তানের মেয়েরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে যেতে পারছেনা।

ব্যাপক আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছর মার্চের শেষ দিকে মেয়ে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তালেবান বাহিনীর শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নির্দেশই এর মূল কারণ। তবে স্কুল খুলেও বন্ধ করে দেওয়ার এই পদক্ষেপে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন সাধারণ আফগান জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব।

এদিকে, সম্প্রতি ঘরের বাইরে নারীদের জন্য বোরকাও বাধ্যতামূলক করেছে তালেবান। তবে সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাক্কানি দাবি করেন, তালেবান গোষ্ঠী নারী শিক্ষার বিরোধী নয়। তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- আফগানিস্তানে কেউই নারী শিক্ষার বিরোধী নয়। তবে আফগান মেয়েদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব এখন শেষ পর্যায়ে। খুব শিগগিরই আপনারা এ বিষয়ে সুখবর পাবেন’।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?