অনলাইন ডেস্ক, ১৮ মে।। প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে হলিউড অভিনেতা জনি ডেপের মানহানির মামলার শুনানি চলাকালীন তাদের দুজনের দাম্পত্য ঝগড়ার সময়ের অদ্ভুত সব কর্মকাণ্ডের কথা প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি জনি ডেপ অভিযোগ করেছিলেন, একবার ঝগড়ার পর অ্যাম্বার তার বিছানায় মলত্যাগ করে দেন। তবে অ্যাম্বার এবার সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গতকাল সোমবার আদালতের শুনানিতে অ্যাম্বার জনির বিছানায় মলত্যাগের অভিযোগ অস্বীকার করেন। এক সপ্তাহ বিরতির পর গত রবিবার ফের শুনানি শুরু হয়েছে জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ডের মামলার। আগামী ২৭ মে এই শুনানি শেষ হবে।
সোমবার অ্যাম্বার হার্ডকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, জনি ডেপের কুকুর বুর ‘বাথরুমের সমস্যা’ ছিল এবং বিছানায় মলত্যাগের জন্য সেই কুকুরটিই দায়ী।
চলতি মাসের শুরুর দিকে জনি ডেপ মামলায় তার সাক্ষ্য দেওয়ার সময় অভিযোগ করেছিলেন যে, তার প্রাক্তন স্ত্রী তার বিছানায় থাকা মলজাতীয় পদার্থের জন্য তার কুকুরকে দোষারোপ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেননি যে তিনি ছবিতে যে মল দেখেছেন তা তার কুকুরের। তিনি একে অ্যাম্বারের ‘মল প্রসব’ বলেও মন্তব্য করেন। এই হলিউড অভিনেতা বলেন যে, সেটা ‘মানুষের মল’ ছিল এবং এতে কোনও সন্দেহ নেই।
জনি ডেপের দীর্ঘদিনের নির্বাহী ড্রাইভার এবং নিরাপত্তা প্রহরী স্টারলিং জেনকিন্সও বলেন যে, ওই ঘটনার পর অ্যাম্বার হার্ড তাকে বলেছিলেন যে, বিছানায় মলত্যাগ একটি ‘ভয়াবহ রসিকতা, যা করাটা ঠিক হয়নি’।
যাইহোক, সোমবার তার সাক্ষ্য দেওয়ার সময় অ্যাম্বার হার্ড মলত্যাগের অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং জেনকিন্সের সঙ্গে এমন কোনো কথোপকথনও অস্বীকার করেছেন। অ্যাম্বার হার্ড বলেন, তাদের একটি কুকুরের ‘পায়খানা নিয়ন্ত্রণের সমস্যা’ ছিল এবং প্রায়শই তাদের বিছানায় সে মলত্যাগ করত। সেদিন তিনি যখন জিনিসপত্র প্যাকিং করছিলেন কুকুরটি তখন বিছানায় ছিল। তাই তিনি এবং তার বন্ধু কোচেল্লার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় বিষয়টি খেয়াল করেননি।
অ্যাম্বার হার্ড বলেন, ‘প্রথমত, আমি এটাকে মজার মনে করি না। আমি জানি না প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা কী করেন। আমিও মজা করার মেজাজে ছিলাম না। আমার জীবন ভেঙ্গে পড়ছিল। আমি আমার জীবনের একটি নতুন মোড়ে ছিলাম। আমি খুব সিরিয়াস ছিলাম।আমি সদ্যই আমার ৩০তম জন্মদিনে আমার স্বামীর আক্রমণের শিকার হয়েছিলাম, যার সঙ্গে আমি পাগলের মতো প্রেমে ছিলাম। কিন্তু ওই ঘটনার পর আমি জানতাম যে, আমার সরে যাওয়া উচিৎ। সেটা সত্যিই কোনো আনন্দদায়ক সময় ছিল না এবং আমি এটাকে মজার মনে করি না। পিরিয়ড। এই অভিযোগ বিব্রতকর’।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা এক লেখায় অ্যাম্বার হার্ড নিজেকে দাম্পত্য সহিংসতার শিকার বলে দাবি করায় তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে ৫ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন জনি ডেপ। কিন্তু ওই লেখায় অ্যাম্বার জনি ডেপের নাম নেননি। এরপর প্রাক্তন স্বামীকে মিথ্যাবাদী দাবি করে পাল্টা মামলা করে ১০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন অ্যাম্বারও হার্ডও।
২০১৫ সালে বিয়ে হয় জনি (৫৮) এবং অ্যাম্বারের (৩৬)। গার্হস্থ্য সহিংসতা এবং তুমুল অশান্তির দাম্পত্য পেরিয়ে ২০১৭ সালে বিচ্ছেদ হয় তাদের।
অ্যাম্বার জানান, ‘সে ছিল আমার জীবনের ভালোবাসা। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই সে আমাকে সন্দেহ করতে শুরু করে। সে ভাবত আমি আমার সব পুরুষ বন্ধুর সঙ্গেই বিছানায় যাই। এমনকি আমি যখন প্রমাণ করতাম যে, আমি এর সঙ্গে বিছানায় যাইনি বা ওর সঙ্গেও বিছানায় যাইনি। তখন সে বলতো আমি হয়তো অন্য কারো সঙ্গে বিছানায় যাই’।
তিনবার অস্কার পুরস্কারের জন্য মনোনীত জনি ডেপ এবং অ্যাম্বার হার্ড ২০০৯ সালে ‘দ্য রাম ডায়েরি’ ছবির সেটে পরস্পরের প্রেমে পড়েন। এরপর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে করেন। এর দুই বছর পরে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অ্যাম্বার ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা এক মতামত কলামে দাবি করেন তিনি স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
২০২০ সালের নভেম্বের তাকে ‘বউ পেটানো’ নায়ক বলায় জনি ডেপ ব্রিটেনের দ্য সান পত্রিকার বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন। তবে সেই মামলায় হেরে যান জনি। অ্যাম্বারের সঙ্গে জনির মামলার শুনানি চলছে গত ১১ এপ্রিল থেকে। আগামী ২৭ মে শুনানি শেষে রায়ের জন্য মামলা জুরি বোর্ডে পাঠানো হবে।