চারদিনের নেপাল সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

অনলাইন ডেস্ক , ১৭ মে।। বুদ্ধ পূর্ণিমায় নেপাল সফর করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার আমন্ত্রণেই নেপালের লুম্বিনীতে প্রধানমন্ত্রী। এদিন মায়াদেবীর মন্দিরে পুজো দেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে ঘুরে দেখেন বুদ্ধদেবের জন্মস্থান।

মায়াদেবী মন্দিরে দর্শন করার আগেই মোদি একটি ট্যুইট করে লেখেন, ‘আমি বুদ্ধ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে মায়াদেবী মন্দিরে প্রার্থনা করার জন্য উন্মুখ। ভগবান বুদ্ধের জন্মের পবিত্র স্থানে শ্রদ্ধা জানাতে লক্ষ লক্ষ ভারতীয়দের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পেরে আমি সম্মানিত’। চারদিনের সফরে নেপাল রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন এই সফরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে ছ’টি মউ স্বাক্ষর করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হল নেপালে ড. আম্বেদকর চেয়ার ফর বুদ্ধিস্ট স্টাডিস-এর স্থাপনা। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ কালচারাল রিলেশন্স ও লুম্বিনী বুদ্ধিস্ট ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে তৈরি হবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি আইআইটি মাদ্রাজ ও কাঠমান্ডু ইউনিভার্সিটির মধ্যে হওয়া মউ উল্লেখযোগ্য।
এদিন দেউবার সঙ্গে ছবি টুইট করে মোদি লিখেছেন, ‘বন্ধুত্বের চিরন্তন বন্ধন…!’

এদিন বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে কাঠমাণ্ডুতে মোদি বলেন, বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিতে, ভারত ও নেপালের মধ্যে এই বন্ধুত্ব সমগ্র মানবতার ভালো হবে। নেপাল সবসময় আমাকে তার ‘ঐতিহাসিক আশীর্বাদ’ দিয়ে আশীর্বাদ করেছে। জনকপুরে আমি বলেছিলাম নেপাল ছাড়া ভগবান রামও অসম্পূর্ণ। আমরা যখন অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরি করছি, তাতে নেপালও খুশি হয়েছে।মোদি বলেন, নেপাল এবং ভারতের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক, পারস্পরিক ঐতিহ্য, স্নেহের বন্ধন রয়েছে। আমাদের সেই সম্পর্কে আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে আমরা একসঙ্গে ভগবান বুদ্ধের বাণী ছড়িয়ে দিতে পারি। বুদ্ধ এই গোটা বিশ্বের সমগ্রক্ষেত্রেই বিরাজমান। ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার জন্মস্থান গুজরাটের ভাদনগরে। সেখানেও বহু শতাব্দী আগে বৌদ্ধ শিক্ষার একটি বড় কেন্দ্র ছিল। গৌতম বুদ্ধ আমাদের ত্যাগের মাহাত্ম্য উপলব্ধি করিয়েছেন। লুম্বিনী একটি বৌদ্ধ ট্যুরিজম সার্কিট হিসেব গড়ে উঠেছে। এই পর্যটন নেপাল ও ভারতকে সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে দুই দেশকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে।

আমরা লুম্বিনীর কাছে আরও সীমান্ত চেক পোস্ট তৈরি করেছি। আমাদের দুই দেশের জন্য একসঙ্গে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আমাদের সম্পর্কের বিস্তৃতি একদিন হিমালয়ের মতো সুউচ্চ হবে। উল্লেখ্য, এই সফর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন নেপাল ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক সুসংসহত করার উদ্দেশ্য রয়েছে তাঁর। এদিন নেপাল পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী মোদি ট্যুইট করে লেখেন, ‘নেপালে অবতরণ করেছি। বুদ্ধ পূর্ণিমার বিশেষ দিন উপলক্ষে নেপালের মানুষের মধ্যে থাকতে পেরে খুশি। লুম্বিনীতে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় আছি।’ এদিন লুম্বিনী পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে স্বাগত জানান শের বাহাদুর দেউবা।

নেপালের লুম্বিনী গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান হিসেবে প্রসিদ্ধ। সেই প্রসিদ্ধ নগরীতেই সোমবার পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী মোদি। রয়েছে একাধিক কর্মসূচী। সফরকালে একাধিক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারিত করার জন্য আলোচনা করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। আলোচনার মধ্যে জলবিদ্যুৎ, উন্নয়ন এবং সংযোগের বিষয়টি থাকবে।

নেপালের বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতি অনুসারে ‘বৈঠকে তাঁরা নেপাল-ভারত সহযোগিতা এবং পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আলোচনা করবেন।

উল্লেখ্য সম্প্রতি দিল্লি সফরে এসেছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী দেউবা। সেই সফরেও দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। রবিবার নিজের বিবৃতিত প্রধানমন্ত্রী মোদি দেউবার দিল্লি সফরের উল্লেখ করে বলেন, ‘সেই বৈঠকের আলোচনা নেপাল সফরে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

এই নিয়ে পঞ্চমবার নেপাল সফরে নরেন্দ্র মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৪ সালে নেপাল সফরে আসেন তিনি। তবে ২০১৯ সালে পুনঃনির্বাচনের পর এটি হবে মোদির প্রথম নেপাল সফর।
প্রথম বার ওই দেশে সফরে গিয়ে বিহারের বুদ্ধগয়া থেকে একটি বোধিবৃক্ষ উপহার দিয়েছিলেন মোদি। সোমবার লুম্বিনীতে গিয়ে সেই গাছে জল দেন মোদি ও শের বাহাদুর দেউবা

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?