অনলাইন ডেস্ক, ১২ মে।। শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন দেশটির ইউএনপি দলের নেতা রনিল বিক্রমাসিংহে। ধারণা করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১২ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে তিনি শপথ নিতে পারেন। তার দল এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে লঙ্কান সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর।
এর আগে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বিক্রমাসিংহে। মাহিন্দা রাজাপাক্ষের পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে বেশ জল্পনা-কল্পনা চলছিল দেশটিতে।
জানা গেছে, শপথ গ্রহণ করে তিনি কলম্বোর একটি মন্দিরে যাবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি তার কার্যক্রম শুরু করবেন।
এর আগে চলতি সপ্তাহেই নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষে। চলমান সহিংস আন্দোলনের মধ্যেই তার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যায় দেশটির মন্ত্রিসভা।
এক বিবৃতিতে গোতাবায়ে রাজাপাক্ষে জানান, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও দেশের কার্যক্রম পরিচালনায় নতুন সরকার গঠনে আমি পদক্ষেপ নিচ্ছি। সংসদের হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়ার জন্য কিছু সাংবিধানিক সংস্কার করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গতকাল বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে গোতাবায় রাজাপাক্ষে জানিয়েছেন তিনি পদত্যাগ করবেন না। দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকারও করেছেন তিনি।
ওদিকে, গোতাবায়া রাজাপাক্ষে পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করায় শ্রীলঙ্কায় সেনা অভ্যুত্থানের গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। কলোম্বোর রাস্তায় বিপুল সংখ্যায় সৈন্যদের অস্ত্রসজ্জিত গাড়িবহর দেখে গুজব ছড়ায় যে, দেশে সেনা অভ্যুত্থান হতে পারে।
বিক্ষোভকারীরা কারফিউ ভেঙ্গে গতকাল দ্বিতীয় রাতের মতো বিক্ষোভ করেছে। তাদের দাবি এখন প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ।
একজন বিক্ষোভকারী বিবিসি তামিল সার্ভিসকে বলেছেন, ‘কারফিউ ভেঙ্গে আমাদের এই বিক্ষোভ করতে হচ্ছে কারণ আমাদের কোনো উপায় নেই। আমরা এখনো ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এখনও কেরোসিন, পেট্রোল,ডিজেল এবং বিদ্যুৎ নেই’।
কলম্বোর বিক্ষোভকারী কাভিনদ্য থেন্নাকুন বিবিসিকে বলেন, ‘গত ৩০ দিন আপনি কোথায় ছিলেন? মানুষের ওষুধ, খাদ্য কিছুই নেই। পুরো দেশ স্থবির হয়ে আছে। তিনি (গোতাবায়া রাজাপাকসে) যে সংস্কারগুলো প্রস্তাব করছেন, সেগুলো আমাদের প্রয়োজন নেই। আমরা এখন চাই তার পদত্যাগ। গোতাবায়া রাজাপাক্ষে কেন সেটি বুঝতে পারছেন না’।
কিন্তু গোতাবায়া রাজাপাক্ষে বলেছেন, তিনি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন, তার উদ্দেশ্য ঐক্যমত্যের সরকার তৈরি করা। কিন্তু প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বলেছে, প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের অংশ হবে না।