স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১০ মে।। রাজবাড়ীতে শতবর্ষের বেশী সময় ধরে চলে আসা প্রথায় আজও অনুষ্ঠিত হল মঙ্গলচণ্ডী ব্রত। মা বোনেরা এদিন ভক্তিভরে ব্রত করেছেন। অনেকে বাড়িতেও এই ব্রত করেছেন। এখানে উল্লেখ করা যায়, ”মঙ্গল” শব্দের অর্থ হলো, ‘শুভ’ বা ‘হিতকর’ এবং ”চন্ডী” শব্দের অর্থ হলো, ”দেবী দূর্গা”।
মঙ্গলচন্ডী হলো প্রকৃতপক্ষে একটি ব্রতের নাম। এই ব্রতে দেবী হিসেবে মা দুর্গার পূজা করা হয়। মূলত ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মা বোনেরা মঙ্গলচন্ডী ব্রতানুষ্ঠান করে থাকেন। প্রধানত বাঙলার জৈষ্ঠ মাসের চারটি মঙ্গলবারে মঙ্গলচন্ডী ব্রত পালিত হয়। এই ব্রতের পূজা করে ব্রাহ্মণরাই। দেবীর কোনো মূর্তিতে পূজা না করে আবার ঘটেও পূজা করা হয়ে থাকে। পরিবারের মহিলারাই এই ব্রতের ব্রতী হন।
পতি ও পুত্রের মঙ্গল কামনাতে এই ব্রত করা হয়। ব্রতের প্রধান প্রসাদ হলো ”ষোলোবাটা”। এটি ষোলোরকমের বস্তু দ্বারা নির্মিত হয়। পূজান্তে মহিলা ব্রতীগণ এই প্রসাদ গ্রহন করে। এই ষোলোবাটার ষোলোরকমের উপকরণ নিয়ে বিভিন্ন মত আছে। এইবিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় মানুষ বিভিন্ন মত অবলম্বন করেন।
এছাড়াও, মানুষ নিজের সাধ্যমত নানান উপকরণ,ভোজ্য প্রভৃতি দিয়ে এই ব্রত করে থাকেন। এই ব্রতের অন্যতম প্রধান দুটি জিনিজ হলো, ”মঙ্গল থলি” এবং ”পুঙ্গি”। মঙ্গলথলি হলো,রক্তবর্ণ শালুতে বাঁধা হরিতকি ফল, আতব চাল প্রভৃতি। গৃহের মঙ্গলার্থে এটি তৈরী করা হয়। আর কাঁঠাল পাতার ভিতরে তেরোটা আতব চাল, তেরোটা ধান ও অন্যান্য বস্ত তেরোটা করে দিয়ে কাঁঠাল পাতার মুখে তেরোটা দূর্বা ঘাস দিয়ে তৈরী দ্রব্য।
দেবীর প্রকৃত মন্ত্র হলো-
” জৈসা ললিত কান্তাক্ষা, দেবী মঙ্গল চন্ডীকা। বরদাভয় হস্তা চ দ্বিভুজা গৌর দেহিকা, রক্তবস্ত্র শনস্থা চ রতনৌজ্জ্বল মন্ডিতা ।। রক্তকৌশীয় বসনা স্মিত বক্ত্রা শুভাননা, নব যৌবন সম্পনা, চারবঙ্গীন ললিতপ্রভা।। ঔঁ হ্রীং স্রীং মঙ্গলচন্ডীকায়ৈ নমঃ।”