অনলাইন ডেস্ক, ৬ মে।। ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় মারিওপোল শহরের আজভস্টাল ইস্পাত কারখানার ভেতরে থাকা ইউক্রেনের যোদ্ধারা রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর দিয়েছেন ইউক্রেনের আজভ রেজিমেন্টের কমান্ডার।
টেলিগ্রামে এক ভিডিও পোস্টে কমান্ডার ডেনিস প্রকোপেঙ্কো তার সৈন্যদের প্রশংসা করে বলেছেন তারা রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে অতিমানবীয় তৎপরতা দেখাচ্ছে।
কারখানার সার্বিক পরিস্থিতিকে তিনি ‘ভয়াবহ কঠিন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তার এ বার্তা এমন সময় এলো যখন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন যে রুশ সৈন্যরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করেছে।
মারিওপোলে এই ইস্পাত কারখানাকেই এখন ইউক্রেনীয় সৈন্যদের শেষ ঘাঁটি বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন বিশাল ওই কারখানার ভেতরে থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে আনার কাজ অব্যাহত থাকবে।
জাতিসংঘের সহায়তা চাইলেন জেলেনস্কি
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় আটকে পড়া ইউক্রেনের নাগরিকদের জীবন রক্ষায় জাতিসংঘের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেসের সাথে ফোনে আলাপকালে বুধবার তিনি এ আহবান জানান। এসময় তিনি এর আগের দফায় ১০০ জনকে ওই কারখানা থেকে সরিয়ে আনার জন্য মিস্টার গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানান।
জেলেনস্কি বলেন, ‘এখনো যারা সেখানে আছে তাদের জীবন বিপন্ন’। ধারণা করা হচ্ছে এখনো প্রায় ২০০ জন বেসামরিক নাগরিক ওই কারখানার ভেতরে আছে।
ইউক্রেন থেকে পাওয়া সর্বশেষ খবর
•মারিউপোলে আজভস্টাল ইস্পাত কারখানার ভেতরে রুশ সৈন্যদের সাথে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের খবর দিয়েছেন ইউক্রেনের একজন কমান্ডার।
•ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে রুশ বাহিনী ওই কারখানার নিয়ন্ত্রণ নিতে বিমান হামলা করছে।
•জাতিসংঘ জানিয়েছে বৃহস্পতিবার আজভস্টাল কারখানাসহ পুরো মারিউপোল থেকে আরও ৫০০ জন বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
•রুশ বাহিনী দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে আক্রমণ আরও জোরালো করেছে।
•দোনেৎস্কের একটি এলাকায় রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে।
•ইউক্রেনের সেনারা দাবি করেছে যে তারা খেরসন ও মিকোলেভের কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে।
মারিউপোলে লড়াই কি শেষ হতে চলেছে?
বিবিসি সংবাদদাতা জো ইনউড লিখেছেন যে মারিওপোলের লড়াই আজই শেষাংশে প্রবেশ করতে পারে। আগামী ৯ মে রাশিয়ার বিজয় দিবসের আগেই রুশ সেনারা মারিওপোল পুরোপুরি দখল করতে চায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজভ সাগরের গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর নগরী কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেকের কাছে এটিই ছিলো রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক।
কয়েক সপ্তাহ ধরে এ লড়াইয়ের শেষ জায়গা ছিলো আজভস্টাল ইস্পাত কারখানা। এ কারখানার ভেতরে টানেল ও পারমাণবিক বাংকারের মধ্যে লুকিয়ে ছিলো ইউক্রেনের সেনারা ছাড়াও বহু বেসামরিক নাগরিক।
কয়েকদিনের ব্যাপক বোমাবর্ষণের পর মনে হচ্ছে রাশিয়া সেখানে আক্রমণ আরও জোরদার করেছে।
শহরটির নিয়ন্ত্রণ পেলে রাশিয়া থেকে সরাসরি ক্রিমিয়ার সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো মারিওপোলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে রুশ সেনাদের একটি বড় অংশ কার্যত ‘ছুটি’ পাবে, কারণ তারা এতদিন ব্যস্ত ছিলো ইউক্রেনের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে।