স্টাফ রিপোর্টার, আমবাসা, ৪ মে।। ১৯৫৬ সালে পথ চলা শুরু হয় ডলুবাড়ি গেইট দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের। তবে তখন দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছিল না। প্রথম পর্যায়ে ছিল জে.বি. স্কুল। এরপর সিনিয়র বেসিক স্কুলে উন্নীত হয়। ধীরে ধীরে উন্নীত হয় মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত। এরপর দ্বাদশ মানে উন্নীত হয়। ধলাই জেলা সদর আমবাসা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই স্কুলটির অবস্থান।
প্রকৃতির বুকে এক মনোরম পরিবেশে রয়েছে এই ডলুবাড়ি স্কুল। বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র ছাত্রীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলস্বরূপ বিদ্যালয়টি আজ সেজে উঠেছে। বর্তমান সময়ে বিদ্যালয়টিকে এমন ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে যা গোটা রাজ্যের মধ্যে নজির সৃষ্টি করেছে। বিদ্যালয়টিতে যাওয়ার রাস্তার দু’পাশে রয়েছে অনেকগুলো মাইলস্টোন। তবে এই মাইলস্টোন গুলো কিলোমিটার নির্ধারণ করেনি। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে ও শিক্ষা গ্রহণের জন্য এই মাইলস্টোন গুলোতে রয়েছে ইতিহাসের বিভিন্ন সাল এবং সে সময়ে ঘটে যাওয়া কর্মকাণ্ড, রয়েছে সাধারন জ্ঞানের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর। বিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারের পাশে থাকা দেয়ালগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষনীয় বিষয়। বিদ্যালয়ে প্রবেশের পর রয়েছে চোখধাঁধানো দুটো ফুলের বাগান যার মধ্যে শোভা পাচ্ছে শাপলা ফুল। বিদ্যালয়ের ভেতরে স্বামী বিবেকানন্দ থেকে শুরু করে বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বি আর আম্বেদকর, সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এর মর্মর মূর্তি।
এই বিদ্যালয়ের চতুর্দিকে এমন ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে যেদিকেই চোখ যাবে সেদিকেই রয়েছে শিক্ষনীয় বিষয়। বিদ্যালয়ের দেয়াল থেকে শুরু করে দোতলায় ওঠার সিঁড়ি প্রতিটি স্থানে রয়েছে শিক্ষনীয় বিষয়। বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক সুকুমল কান্তি দাস জানিয়েছেন এই কাজ করতে গিয়ে এলাকাবাসী থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি মানুষ সহায়তা করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা, ছাত্র-ছাত্রীরা সকলেই এগিয়ে এসেছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। এই বিদ্যালয়টিকে এমন ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে যার ফলস্বরূপ এবছর বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে এসকার্শানে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কুলে এসেছেন শুধু বিদ্যালয়টিকে ঘুরে দেখার জন্য।
শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা বেশ কয়েকবার এ বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে এসেছেন। এই বিদ্যালয়টির পাশেই রয়েছে আমবাসা পৌরসভা কর্তৃক নির্মিত একটি বাচ্চাদের খেলার পার্ক।এক কথায় এই বিদ্যালয়টিকে দেখলে প্রতিটি মানুষের একটি অন্য ধরনের অনুভূতির সৃষ্টি হবে। আর তার স্বীকৃতি স্বরূপ বিগত বছর রাজ্য শিক্ষা দপ্তর শিক্ষক দিবসকে কেন্দ্র করে যে কয়টি বিদ্যালয়কে পুরস্কৃত করেছে তার মধ্যে ছিল ডলুবাড়ি গেইট দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের নাম। স্বচ্ছতায় এ রাজ্যে সেরার শিরোপা দখল করেছে এই বিদ্যালয়।
যার পরিপ্রেক্ষিতে খুশির জোয়ারে ভেসে ছিল সকলে। এক কথায় বলতে গেলে রাজধানীর বাইরে আঠারমুরা ও লংতরাই পাহাড়ের মধ্যমণি ধলাই জেলা সদর আমবাসার অনতিদূরে ডলুবাড়িতে একটি স্কুলের এতটাই সৌন্দর্যায়ন ইতিমধ্যে হয়েছে যা বলতে গেলে গোটা রাজ্যে নজির সৃষ্টি করেছে। তবে এই বিদ্যালয়টিকে আগামী দিনে কিভাবে আরো সুন্দর করে তোলা যায় সেদিকেই চেষ্টা বিদ্যালয় কতৃপক্ষের। পঠন পাঠন থেকে শুরু করে নিয়মানুবর্তিতা সবকিছুতেই এখন এগিয়ে এই স্কুলটি।