স্টাফ রিপোর্টার, আমবাসা,৪ মে।। লংতরাইভ্যালি মহাকুমার মানিকপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু দুই শিশুর। পরবর্তীতে উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর চালায় হাসপাতাল।
ঘটনায় গুরুতর আহত চিকিৎসক প্রণব দেববর্মা। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় আগরতলায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায় লংতরাইভ্যালি মহকুমার রাজধর কাছারিছড়া এলাকার সত্য মোহন ত্রিপুরার দুই শিশু ধর্মীতা ত্রিপুরা (৮) ও ধনঞ্জয় ত্রিপুরা (৪) জ্বরে আক্রান্ত হলে তাদের আজ সকালে নিয়ে আসা হয় মানিকপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। জানা যায় হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে তাদের চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসা শুরুর অল্পসময়ের পরই দুই শিশু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। দুই শিশু মৃত্যুর পরপরই স্থানীয় লোকজন ভিড় জমাতে থাকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।
নিমেষের মধ্যেই উত্তেজিত জনতা হাসপাতলে আক্রমণ চালায়। ভাঙচুর করে হাসপাতালের আসবাবপত্র। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয় চিকিৎসক প্রণব দেববর্মা। মাথা ফেটে যায় উনার। সাথে সাথেই ঘটনার খবর যায় মানিকপুর থানায়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মানিকপুর থানার পুলিশ ও টি এস আর। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে তারা । পরবর্তী সময় সেখান থেকে আক্রান্ত চিকিৎসককে নিয়ে আসা হয় আমবাসায়।
সন্ধ্যা নাগাদ তড়িঘড়ি উন্নত চিকিৎসার জন্য ডা.প্রণব দেববর্মাকে আগরতলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধলাই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অ্যাপেলো কলই জানিয়েছেন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল এই ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য চিকিৎসকদের একটি টিম সেখানে যাবেন।কি ভাবে ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত হবে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। অপরদিকে অল ত্রিপুরা গভমেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ধলাই জেলা সভাপতি ডা. সঞ্জয় বিশ্বাস নিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেন এই ঘটনায় তিনি মর্মাহত। শেষ মুহূর্তে এই শিশুদুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও শিশু দুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়নি। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার দিতে চাইলেও তাদের পরিবারের লোক তাতে রাজি হয়নি। তবে চিকিৎসকের ওপর এ ধরনের আক্রমণ কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
তবে এদিনের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে সর্বত্র। পাহাড় এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব আবারো চরম আকার ধারণ করতে চলেছে বলে এমনটাই অভিমত অভিজ্ঞ মহলের।