অনলাইন ডেস্ক,২৮ এপ্রিল।। ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর তৃতীয় মাসে এসে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চল পুরোপুরি দখলে নিতে পেরেছে রুশ সেনারা। দখলের পর এবার সেখানে রুশ মুদ্রা রুবলে লেনদেন চালু করতে যাচ্ছে মস্কো। এমনকি রাশিয়ার টেলিভিশন এবং রেডিও ইতোমধ্যেই অঞ্চলটিতে সম্প্রচার শুরু করেছে।
দক্ষিণ ইউক্রেনের এই অঞ্চলটির সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের ডেপুটি চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার বার্তাসংস্থা আরআইএ।
দুদিন আগে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চল পুরোপুরি দখলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় রুশ সেনারা। সেসময় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের বাহিনী দক্ষিণ ইউক্রেনের সমগ্র খেরসন অঞ্চলটিকে ‘মুক্ত’ করেছে। যদিও মার্চের শুরুতেই খেরসন শহরটি দখলে নেয় রুশ সেনারা।
গত মঙ্গলবার ইউক্রেনের একজন আঞ্চলিক সামরিক কর্মকর্তা বলেন, খেরসনের আঞ্চলিক প্রশাসনের এবং একইসঙ্গে সিটি কাউন্সিলের নতুন প্রধান নিয়োগ করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। একইদিন খেরসনের ইইক্রেনীয় গভর্নর হেন্নাদি লাহুতা জানান, দখলকারীরা খেরসন সিটি কাউন্সিলের পুরো প্রাঙ্গণ দখল করে নিয়েছে। পরে সেখান থেকে তারা ইউক্রেনের সকল প্রতীক ও চিহ্ন সরিয়ে দেয় এবং নিজস্ব রক্ষীদের নিযুক্ত করে।
খেরসনের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের ডেপুটি চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে রুশ বার্তাসংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণের এই অঞ্চলটি আগামী ১ মে থেকে রাশিয়ার মুদ্রায় লেনদেন শুরু করবে।
অবশ্য রাশিয়ার মুদ্রায় লেনদেন শুরু হলেও ইউক্রেনীয় মুদ্রা রিভনিয়াও আপাতত সেখানে চালু থাকবে। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় মুদ্রা থেকে রুশ মুদ্রায় পুরোপুরি রূপান্তরে চার মাস পর্যন্ত সময় লাগবে। এই সময়ে রাশিয়ান রুবল ও ইউক্রেনীয় রিভনিয়া উভয়ই সেখানে কার্যকর থাকবে।
এদিকে সমগ্র খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার রেডিও এবং টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আরআইএ। বার্তাসংস্থাটি আরও জানিয়েছে, স্থানীয় জনগণ ‘লেনদেনের ক্ষেত্রে আরও ব্যাপকভাবে রাশিয়ান রুবল ব্যবহার করতে শুরু করেছেন’।
গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর এবং বন্দরনগরী খেরসন দখল করে নেয় রাশিয়া। প্রথম বড় কোনো ইউক্রেনীয় শহর হিসেবে খেরসন দখল করেছিল রুশ সেনারা। এর প্রায় দুই মাসের মাথায় এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে খেরসনের পুরো অঞ্চলটি দখলে নেয় রাশিয়া।
প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার খেরসন শহর ও অঞ্চলটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দখলে যাওয়া মস্কোর জন্য বড় ধরনের এক বিজয়। মূলত রুশ সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটিও হবে শহরটি।
এছাড়া এই শহর থেকে উপকূল বরাবর আরও ভেতরে এবং পশ্চিমের আরেক বৃহৎ বন্দরনগরী ওডেসার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। খেরসন শহরটি কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং একটি শিল্পকেন্দ্র।