প্রবীণ নাগরিকদের অভিজ্ঞতাকে সমাজের ভালোর জন্য কাজে লাগানো প্রয়োজন : মুখ্যমন্ত্রী

 

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৫ এপ্রিল।। প্রবীণ নাগরিকরা হলেন সমাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি। তাদেরকে অবহেলা না করে তাদের অভিজ্ঞতাকে মাজের ভালোর জন্য কাজে লাগানো প্রয়োজন। তবেই সমাজ ব্যবস্থা আরও সুন্দর ও সুদৃঢ় হতে পারবে।

আজ নরসিংগড়স্থিত মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রমের নতুন ভবনের দ্বারোদঘাটন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার সমাজের অস্তিম ব্যক্তি ও প্রবীণ নাগরিকদের নিকট সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পৌঁছানোর লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগের ফলেই লাইট হাউজ প্রকল্পে রাজ্যে গরিবদের জন্য এক হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ধনী-গরিব ও শ্রমিক-মালিকদের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে কোনও রাজাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। দেখা গেছে বিগত দিনে রাজ্যে ধনী-গরিব ও শ্রমিক মালিকদের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই পশ্চাদমুখী মানসিকতার কারণেই রাজ্য অনেক পিছিয়ে পড়েছিল। বর্তমান রাজ্য সরকার এই ভেদাভেদ দূর করে রাজ্যকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে রাজ্যের কৃষকদের গড় মাথাপিছু আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রধামন্ত্রী আবাস যোজনায় প্রকৃত সুবিধাভোগীরাও ঘর পাচ্ছেন। শুধু তাই নয় রাজ্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির সুফল এখন প্রকৃত ব্যক্তির নিকট পৌঁছে যাচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর একটা বিশেষ আন্তরিক মনোভাব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগের ফলেই ত্রিপুরায় প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের গতি পেয়েছে। রাজ্যের উৎপাদিত কাঠাল, আনারস, এলাচি লেবু বর্তমানে দেশের গন্ডি পার হয়ে জার্মানী, দুবাই’র মতো দেশে পৌঁছে যাচ্ছে। তাতে আর্থিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন রাজ্যের কৃষকগণ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহাত্মগান্ধী মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রমের নতুন ভবন নির্মাণে আধুনিক গ্রীণ টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে যা ভূমিকম্প নিরোধক। রাজ্যে এই প্রথম ভবন নির্মানে এধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার নিয়ম, নীতি, নিষ্ঠার মনোভাব নিয়ে কাজ করছে। রাজ্য সরকার গরিবদের যেমন ঘর প্রদান করছে, পাশাপাশি অন্ত্যোদয় পরিবারগুলিকে অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার জন্যও দুই হাজার টাকার সহায়তা প্রদান করছে। অনুষ্ঠানে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, প্রবীণ নাগরিকদের কল্যাণে কাজ করা রাজ্য সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।

রাজ্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই গরিব ও প্রবীন নাগরিকরা আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ নিতে পারছেন। দূর্গাপূজার আগেই বৃদ্ধভাতা সহ অন্যান্য সামাজিক ভাতা দুই হাজার টাকা করার উদ্যোগ নিয়েছে দপ্তর। এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়তে সরকারের পাশে সবাইকে থাকার আহ্বান জানান সমাজ কল্যাণমন্ত্রী।

স্বাগত ভাষনে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং বলেন, মহাত্মাগান্ধী মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রমের নতুন ভবনটি নির্মানে আধুনিক গ্রীণ টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে কম সময়ের মধ্যেই ভবনটির নির্মান কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে। ১০৩৮.৭৪ বর্গমিটার এলাকা বিশিষ্ট এই ভবনটি নির্মানে ৬ কোটি ৮২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

সচিব শ্রী সিং আরোও বলেন, বর্তমানে রাজ্যে ৪টি বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। এরমধ্যে ১টি সরকার পরিচালিত এবং অবশিষ্ট ৩টি এন জি ও দ্বারা পরিচালিত। রাজ্যের খোয়াই ও অমরপুরে আরও ২টি নতুন বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস, নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে এবং সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল। অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বৃদ্ধাবাসের প্রবীণ নাগরিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?