অনলাইন ডেস্ক,২৩ এপ্রিল।। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র বা অর্থ দিয়ে সহায়তা করলে চীনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে বলে ফের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, ভারতকে রাশিয়ার অস্ত্রের ওপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, চীন যদি ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে কোনো ‘বস্তুগত সহায়তা’ দেয় তাহলে তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। এসময় তিনি রাশিয়ার অস্ত্রের উপর নির্ভরতা শেষ করতে ভারতকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিও দেন।
বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহ-অর্থায়নে পরিচালিত গ্রুপ ফ্রেন্ডস অফ ইউরোপ আয়োজিত একট অনুষ্ঠানে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান এই হুঁশিয়ারি ও প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণায় সহযোগিতা করে চীন ইউক্রেন যুদ্ধে ইন্ধন যোগাচ্ছে’। তিনি আরও বলেন যে, তিনি আশা করেছিলেন, বেইজিং রাশিয়ার যুদ্ধ থেকে ‘সঠিক শিক্ষা’ নেবে। এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার মিত্রদের থেকে আলাদা করা যাবে না তাও বুঝতে পারবে।
তিনি বলেন, ‘তারা দেখেছে যে, ইউক্রেনে হামালার জেরে আমরা কীভাবে রাশিয়ার ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি। তারা যদি রাশিয়াকে কোনো বস্তুগত সহায়তা দেয় তাহলে তাদের ওপরও এসব নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে আসতে পারে, এটা তাদের বোঝা উচিৎ’।
শেরম্যান আরও বলেন, ‘রাশিয়ার অস্ত্র শিল্পের ওপর বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে রাশিয়ার অস্ত্রের উপর তার ঐতিহ্যগত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে’।
তিনি বলেন, ‘ভারত বুঝতে পেরেছে যে, তাদের সামরিক বাহিনী অদূর ভবিষ্যতে আর রাশিয়ান অস্ত্রের ওপর নির্ভর করতে পারবে না। কারণ আমাদের নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার সামরিক-শিল্পকে পিছিয়ে দিয়েছে এবং তারা আর সহজে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না’।
চীন গত সপ্তাহে বলেছিল যে, তারা রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করার পরিকল্পনা করছে। ইউক্রেনে পুতিন বাহিনীর সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক দৃঢ় রয়েছে। তবে চীনা কোম্পানিগুলো রাশিয়ার ওপর জারি করা মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো মেনে চলছে। চীন সরকার এসব নিষেধাজ্ঞাকে রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবেও আখ্যায়িত করেছে।
ভারত মূলত ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে চীনের মতো একই দৃষ্টিভঙ্গিগত অবস্থান নিয়েছে। জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা নিন্দা প্রস্তাবে ভোট না দিয়ে যুদ্ধবিরতি এবং কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বানকে সমর্থন করেছে ভারত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলার সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছেন যে, চীনের সঙ্গে তাদের সীমান্তকে সুরক্ষিত করতে রাশিয়ান অস্ত্রের প্রয়োজন। কারণ রাশিয়া তাদেরকে অনেক সস্তায় অস্ত্র দিতে পারে।