অনলাইন ডেস্ক, ২০ এপ্রিল।। ইউক্রেনের মারিওপোলের সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য বুধবার ২টা পর্যন্ত নতুন সময়সীমা বেধে দিয়েছে রাশিয়া।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, পুরোপুরি মানবিক নীতিবোধের ওপর ভিত্তি করে ইউক্রেনীয় বাহিনী ও তাদের ভাড়াটে যোদ্ধাদের আবারও আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দিচ্ছে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী। আজ মস্কো সময় বেলা ২টার মধ্য তাঁদের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ ও অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে।
এমন অবস্থায় সেখানে থাকা নৌ সেনাদের কমান্ডার বলেছেন, তার লোকদের হাতে আর মাত্র হয়তো কয়েকদিন বা কয়েক ঘণ্টা সময় বাকী আছে।
এর মধ্যেই যা করার করতে হবে। বুধবার সকালে এক ভিডিও বার্তায় এই আহ্বান জানান তিনি।
বিবিসি ও অন্যান্য গণমাধ্যমে পাঠানো একটি ভিডিওতে মেজর সের্হি ভলিনা বলেছেন, তার সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করবে না বরং তৃতীয় কোনো দেশে সরে যেতে চায়।
তিনি ৫০০ জন আহত সৈন্য এবং শত শত নারী ও শিশুর জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য অনুরোধ করেছেন। শহরের একটি ইস্পাত কারখানায় তারা লুকিয়ে আছেন।
মেজর ভোলিনা বলেন, ‘এটি বিশ্বের কাছে আমাদের শেষ আহ্বান। এটিই আমাদের জীবনের শেষ আহ্বানও হতে পারে। সম্ভবত আমাদের হাতে আর মাত্র একটি দিন বা কয়েক ঘন্টা বাকী আছে’।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্ব নেতাদের প্রতি আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য আহ্বান জানাই।
আমাদের উদ্ধার করে তৃতীয় কোনো দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি’।
আজভস্টাল আয়রন অ্যান্ড স্টিল ওয়ার্কস নামে চার বর্গমাইলের বিশাল একটি ইস্পাত কারখানায় তারা এখন অবস্থান করছেন।
মেজর ভলিনা বলেন, ‘শত্রুদের সংখ্যা আমাদের থেকে কয়েক ডজন গুণ বেশি, তারা আকাশে, গোলাবারুদে, স্থল বাহিনীতে এবং মেশিনগানে ও ট্যাঙ্কে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী’।
সেখানে কতজন ইউক্রেনীয় সৈন্য রয়েছে, তা বলতে অস্বীকার করেন তিনি। তবে তিনি বলেন যে, তাদের ‘লড়াইয়ের মনোভাব চাঙ্গা’ রয়েছে। আহতদের অবস্থা অবশ্য ‘খুব খারাপ’। ‘তারা একটি বেজমেন্টে আছে, তারা সেখানে পচে যাচ্ছে’।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘মারিওপোলের পরিস্থিতি যতটা বেশি সম্ভব গুরুতর’। গত সপ্তাহে জেলেনস্কি জানান, মারিওপোলে অন্তত ২০ হাজার বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন এবং অজ্ঞাত সংখ্যক মানুষকে রাশিয়ায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইউক্রেন সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি মানবিক করিডোরের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে। কিন্তু অতীতে তা ব্যর্থ হয়েছে।
রাশিয়া পূর্ব ডনবাস অঞ্চল দখল করার চেষ্টা করছে তবে যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দারা বলছে ইউক্রেনীয় বাহিনী বেশ কয়েকটি হামলার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
ইউক্রেনের পূর্ব দিকে রুশপন্থী অধ্যুষিত অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের মধ্যে মারিওপোলের অবস্থান, এর দক্ষিণে ক্রিমিয়া। এ শহর কৌশলগতভাবে রাশিয়ার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে শহরটি রুশ সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে মারিওপোলের আজভস্তাল স্টিল কারখানা এলাকায় এখনো ইউক্রেনীয় সেনাদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে।