অনলাইন ডেস্ক,১৯ এপ্রিল।। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ায় অনেকগুলো চ্যানেল, ওয়েবসাইট বন্ধসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ফলে যুদ্ধের খবর পাওয়া রাশিয়ানদের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে। এ পরিস্থিতিতে যুদ্ধের খবরের জন্য রাশিয়ানদের বেছে নিতে হয়েছে বিকল্প ব্যবস্থা।
যুদ্ধের খবরাখবর পেতে কৌতুহলী রাশিয়ানরা ব্যাপক হারে ব্যবহার করছে ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপ। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ৪৫ লক্ষ রাশিয়ান নিজেদের স্মার্টফোনে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পুতিন সরকার রাশিয়ায় বেশকিছু চ্যানেল ও ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় রাশিয়ানরা যুদ্ধের প্রকৃত অবস্থা জানতে টেলিগ্রামের ওপরই নির্ভর করছেন। সেখানেই চলছে যুদ্ধ নিয়ে আলাপ-আলোচনা। সাংবাদিকরাও লেখালেখি করছেন, খবর পরিবেশন করছেন টেলিগ্রামে।
গত দু’মাসে দুবাই ভিত্তিক এই মেসেজিং অ্যাপে রুশ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে হু-হু করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরপরই প্রায় ৪৫ লক্ষ রাশিয়ান নিজেদের স্মার্টফোনে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন। সেন্সর টাওয়ার নামে একটি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ২০১৪ থেকে সব মিলিয়ে রাশিয়ায় প্রায় সাড়ে ১২ কোটি স্মার্টফোনে ডাউনলোড হয়েছে এই অ্যাপ।
রুশ সাংবাদিক ফারিদা রুস্তমোভা প্রথম টেলিগ্রামে অ্যাপে যুদ্ধের খবরাখবর দিতে শুরু করেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্ত, সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাশিয়ার বিরোধীপক্ষের বক্তব্য, যুদ্ধ পরিস্থিতি ইত্যাদি তুলে ধরে টেলিগ্রামেই প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন তিনি। ফারিদার প্রথম প্রতিবেদনের পর তার সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা হয়ে যায় ২২ হাজার।
গত মাসে ‘ইকো অব মস্কো’ নামে রেডিও স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এর ডেপুটি এডিটর টেলিগ্রামে নিজের অ্যাকাউন্ট খোলেন। দাবি করা হচ্ছে, এতে তার শ্রোতার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।
রাশিয়ার অন্য এক সাংবাদিক জানান, টেলিগ্রাম অ্যাপই একমাত্র মাধ্যম যেখানে দেশের বাসিন্দারা যুদ্ধ নিয়ে স্বাধীন ভাবে আলোচনা করছেন। বস্তুত, টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি অ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার পর টেলিগ্রামই হয়ে উঠেছে রাশিয়ার জনপ্রিয়তম অ্যাপগুলির মধ্যে একটি। যদিও এই অ্যাপেও নজরদারির চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এখানেও নাকি নিষেধাজ্ঞা আনার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন।