স্টাফ রিপোর্টার, উদয়পুর, ১৮ এপ্রিল।। বইমেলার কোন বিকল্প হয় না। বইমেলা মানে জ্ঞানের মেলা। জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালায় বইমেলা। রবিবার উদয়পুর কে বি আই প্রাঙ্গণে গোমতী জেলা ভিত্তিক বইমেলার উদ্বোধন করে এই কথা বলেন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, বইমেলার সঙ্গে অন্যকোন মেলার তুলনা হয়না। ছাত্র-ছাত্রী, লেখক লেখিকা, গবেষক, শিক্ষক শিক্ষিকা, অধ্যাপক অধ্যাপিকা সহ সব অংশের মানুষের মিলন ক্ষেত্র হলো এই বইমেলা।
তিনি বলেন জ্ঞানের পরিধি বিশাল। এই পরিধিকে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। সাক্রম অথবা কাঞ্চনপুর থেকে মানুষ আগরতলায় এসে বই কিনতে অসুবিধায় পড়তেন। তাই জেলায় জেলায় বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। তাছাড়া বইমেলাতে প্রত্যেকের অংশগ্রহণ দরকার। তিনি বলেন আধুনিকতার ছোঁয়ায় অতীতকে ভুলে গেলে চলবে না। অতীতকে জানতে হলে বই পড়তে হবে। আগামী দিনে এই বইমেলাকে মহকুমা স্তরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এর আগে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে কোনদিন জেলাভিত্তিক বইমেলা হয়নি। এবারই প্রথম। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, ইতিহাসকে জানতে হবে। আর ইতিহাসকে জানতে হলে আসতে হবে বই মেলায়। কিনতে হবে বই। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ঊনকোটি, ধলাই, উত্তর ত্রিপুরা, খোয়াই এবং দক্ষিণ জেলায় বইমেলা সম্পন্ন হয়েছে। গোমতী জেলাভিত্তিক বইমেলা আয়োজন করার জন্য তিনি স্থানীয় প্রশাসন, উদয়পুর পুর পরিষদ, গোমতী জিলা পরিষদ সহ মেলার সঙ্গে যুক্ত সকল দপ্তরকে ধন্যবাদ জানান।
আগরতলা বইমেলাতে বাংলাদেশ উত্তর-পূর্বাঞ্চল সহ ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে মোট ১৬০ টির মত স্টল খোলা হয়েছিল বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি স্বপন অধিকারী বলেন, বইমেলার গভীরতা অনেক বেশি। বইমেলা মননের মেলা। জ্ঞান অর্জনের মেলা।
সামাজিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার জন্য বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম। আজকের পৃথিবী যত এগোচ্ছে তার মুলে বই। বইয়ের গুরুত্ব বুঝলেই বইমেলার সার্থকতা আসবে। অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি বিধায়ক বিপ্লব কুমার ঘোষ বলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামীজীর সঙ্গে কথা জানতে হলে আসতে হবে বইমেলায়। কিনতে হবে তাঁদের লেখা বই। সম্মানিত অতিথি বিধায়ক রঞ্জিত দাস বলেন, বইমেলার তাৎপর্য অন্যান্য মেলার থেকে আলাদা। এখানে বিদ্বান ব্যাক্তিদের সমাগম ঘটে। অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজসেবক অভিষেক দেবরায়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গোমতী জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা রাভেল হেমেন্দ্র কুমার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদয়পুর পুর পরিষদ এর চেয়ারপার্সন শীতল চন্দ্র মজুমদার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন গোমতী জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক ও সমাহর্তী অরুল কুমার রায়, উদয়পুর পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারপার্সন অনুপম চৌধুরী প্রমুখ। উল্লেখ্য, গোমতী জেলা ভিত্তিক বইমেলা চলবে আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত।
প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সকলের উন্মুক্ত থাকে এবারের বই মেলায় মোট ২৭ টি বইয়ের স্টল খোলা হয়েছে। ক্রেতাদের সুবিধার্তে বই কেনার উপর ১০ শতাংশ ছাড় থাকবে। এছাড়া টি আর এল এম ও জরুরী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দপ্তরের স্টল খোলা হয়েছে। এই বইমেলা উপলক্ষে আয়োজিত হবে কবি সম্মেলন, কুইজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, আলপনা আঁকা প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।