অনলাইন ডেস্ক, ১৩ এপ্রিল।। তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যে শান্তি-আলোচনা শুরু হয়েছিল, তা আর বেশিদূর এগোবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ৫ হাজার ৫৬০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ভস্তোশনি কসমোড্রোম পরিদর্শনে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ইঙ্গিত দেন পুতিন।
পুতিন জানান, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় এখন নিরাপত্তা বিষয়ক শর্তসমূহ আলোচনা হচ্ছে এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো শান্তিচুক্তি যদি করতে হয়, সেক্ষেত্রে ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া, সিভাস্তপোল ও দনবাস (দোনেতস্ক ও লুহানস্ক) ছেড়ে দিতে হবে’।
পুতিন বলেন, ‘সুতরাং দেখা যাচ্ছে আমরা আবার সেই জায়গাতেই ফিরে যাচ্ছি, যেখান থেকে আলোচনা শুরু হয়েছিল।
এই আলোচনার মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে এবং এটা সম্ভবত আমরা সবাই আঁচ করতে পারছি’।
তবে এই যুদ্ধের একটি ভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে এবং বিশ্ব রাজনীতির কৌশলগত দিক থেকে বিবেচনায় তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন পুতিন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে এককেন্দ্রীক আন্তর্জাতিক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল, তা ভেঙে পড়ছে। এটিই এ যুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য’।
পুতিন বলেন, ‘তবে তাৎপর্য যাই হোক, সত্য হলো- যুদ্ধ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা ছিল না। কারণ, ইউক্রেন রাশিয়ার শত্রুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজেকে পশ্চিমা বিশ্বের ঘাঁটিতে পরিণত করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে আমাদের শত্রুদের সেই পরিকল্পনা কখনও সফল হবে না। মূল ব্যাপার হলো, যুক্তরাষ্ট্র ঠিক ততদিনই রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকবে, যতদিন ইউক্রেন থাকবে’।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এ নির্দেশ প্রদানের ২ দিন আগে, ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই এলাকা দনেতস্ক ও লুহানস্ককে (দনবাস) স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
আজ বুধবার ৪৮তম দিনে গড়িয়েছে রুশ বাহিনীর অভিযান। শুরুর দিকে পুরো ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন শহরে হামলা চালালেও বর্তমানে মূলত দেশটির দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলেই হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী।