ভারতের ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বেড়ে যাওয়ার ঘটনার ওপর নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক, ১২ এপ্রিল।।মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার বলেছেন যে, ওয়াশিংটন ভারতে মোদী প্রশাসন, পুলিশ এবং কারাগারের কর্মকর্তাদের হাতে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বেড়ে যাওয়ার ঘটনার ওপর নজর রাখছে।

ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর সঙ্গে এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে নয়াদিল্লির প্রতি এই হুঁশিয়ারি দেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার বিষয়ে আমরা নিয়মিতভাবেই আমাদের ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হই। সে প্রেক্ষিতে আমরা ভারতে সরকার, পুলিশ এবং কারাগারের কর্মকর্তাদের হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ওপর নজর রাখছি’।
ব্লিঙ্কেনের পরে বক্তব্য রাখা ভারতীয় মন্ত্রীরা অবশ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
সম্প্রতি ভারতের কংগ্রেস নেত্রী ইলহান ওমর মোদী সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা করতে বাইডেন প্রশাসনের অনিচ্ছার নিন্দা জানানোর কয়েকদিন পরই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই হুঁশিয়ারি দিলেন। ইলহান ওমর বলেছিলেন, ‘মোদী ভারতের মুসলিমদের প্রতি আর কী করলে তাদের টনক নড়বে’।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর বিজয়ের পর থেকেই ভারতে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের ঘটনা বেড়ে চলেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, মুসলিমরা এবং তাদের জীবনযাত্রা, খাদ্য, সংস্কৃতি ও ঘরবাড়ি হিন্দুত্ববাদীদের হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। অনেক হিন্দুত্ববাদী প্রকাশ্যে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছে।

মহন্ত বজরং মুনি উদাসীন নামে এক হিন্দু পুরোহিতকে উত্তর ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে পুলিশের উপস্থিতিতেই মুসলিম নারীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকি দিতে দেখা গেছে। যে ঘটনার ভিডিও পরে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
এর আগে একটি ওপেন সফটওয়্যার অ্যাপ ব্যবহার করে গিটহাবে কয়েক ডজন মুসলিম নারীকে অনলাইনে ‘নিলাম’ তোলা হয়েছিল।
গত রবিবার ভারতের অন্তত পাঁচটি রাজ্যে রাম নবমীর অনুষ্ঠান চলাকালীন সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাম নবমীর উৎসব উদযাপনের মিছিলের সময় মসজিদের সামনে গিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের লক্ষ্য করে হিংসাত্মক এবং অমানবিক গান বাজানো হলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

হিন্দুদের এই উৎসবের সময় মাংস খাওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) সদস্যরা দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ক্যাম্পাসে ছাত্রদের লাঞ্ছিত করেছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে মুসলিম বিক্রেতাদের মালিকানাধীন ফলের স্টলে ভাংচুর করা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হিজাব পরতে বাধা দিয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা মিস করতে বাধ্য করা হয়। হিজাব পরা শিক্ষার্থীদের অপমান-অপদস্থ করে বিজেপির গেরুয়া সমর্থকরা।

মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে ধর্মীয় মিছিল চলাকালীন সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের একদিন পরে খারগোন শহরে মুসলমানদের বাড়িঘর এবং দোকান-পাটে ভাংচুর চালায় বিজেপি সরকার সমর্থকরা।
এ ধরনের হামলার প্রেক্ষাপটে বর্তমান প্রশাসনের কর্মকর্তারা মূলত নীরব রয়েছেন।
গত এক বছরে খ্রিস্টানদের গির্জা এবং স্কুলেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?