নেটমাধ্যমে কটাক্ষ বা বিদ্রূপের শিকার হয়েছেন রাশমিকা

অনলাইন ডেস্ক, ১২ এপ্রিল।।রাশমিকা মান্দানা। ‘পুষ্পা : দ্য রাইজ’-এর নায়িকার বিপুল জনপ্রিয়তার কারণ তার অভিনয় দক্ষতা ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব৷ নেটমাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয় তিনি। আপাতত ‘দেশের ক্রাশ’ বলে বিবেচিত হচ্ছেন। রাশমিকা মানেই এখন বক্স অফিসে সাফল্য, একের পর এক সুপারহিট সিনেমা।

সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে তার অনুরাগীর সংখ্যা৷ রাশমিকাকে একটি বার সামনে থেকে দেখার জন্য ৯০০ কিলোমিটার দূর থেকে কর্ণাটকে এসেছিলেন এক অনুরাগী।

কিন্তু জীবনের পথ কি এমনই পুষ্পে ভরা? এত ভালোবাসার মধ্যেও রয়েছে কিছু ঘৃণা, কটাক্ষ। নেটমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হওয়া তারকাদের কাছে এক নৈমিত্তিক ঘটনা। জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তারকাদের সমান তালে ট্রলড হতে হয় ছোট ছোট নানা কারণে।

রাশমিকাও এর ব্যতিক্রম নন। সুদক্ষ অভিনেত্রী এবং সুন্দরী হলেও তিনি নেটমাধ্যমে কটাক্ষ বা বিদ্রূপের শিকার হয়েছেন। কিন্তু ক্রমাগত এ কটাক্ষ, ঘৃণা, উপহাসের মধ্যেও ভালো থাকার চাবিকাঠি খুঁজে নেওয়া সত্যিই কি সহজ?

সব সময় হয়ত সম্ভব হয় না বাইরের কিছু মানুষের অহেতুক আক্রমণ উপেক্ষা করে নিজের মনের সঙ্গে ক্রমাগত যুদ্ধ করে ভালো থাকা। দিনের পর দিন কটাক্ষের কারণে রাশমিকা মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি শরীর নিয়ে কটাক্ষের বিরুদ্ধে সরব হন।

ট্রলিং কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যকে বিঘ্নিত করে, তা জানান রাশমিকা।

শরীর নিয়ে বাঁকা মন্তব্য এবং ট্রলিং সম্পর্কে রাশমিকার বক্তব্য, ক্রমাগত যখন নিজের দেহ, নিজের গায়ের রং, ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, বিদ্রূপ করা হয়, তখন তার মনে হতে থাকে, জনতার সামনে যেন নগ্ন অবস্থায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। শুধু শরীর সম্পর্কে বিদ্রূপ করেই থেমে থাকেননি কটাক্ষকারীরা। রাশমিকা জানান, তার পরিবার, ব্যক্তিজীবন, এমনকি তার স্কুল এবং সামগ্রিক বেড়ে ওঠা— সবকিছুকে ট্রল করা হয়েছিল।

একাধিকবার রাশমিকাকে ট্রল করা হয়৷ কখনও হট প্যান্ট পরার জন্য, কখনও অন্তর্বাস নিয়ে। একবার গাড়ি থেকে নামার সময় মাস্ক পরতে ভুলে গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মনে পড়ে এবং মাস্ক পরেন, কিন্তু ততক্ষণে ট্রলারদের শিকার হয়ে যান তিনি।

ছোটবেলার ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন রাশমিকা৷ সেখানেই একজন মন্তব্য করেন ‘দাগার’, কন্নড় ভাষায় যার অর্থ ‘যৌনকর্মী’। রাশমিকা তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করেন এবং বলেন, কোনো ব্যক্তিকে এ ধরনের কুরুচিকর আক্রমণ করা উচিত নয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন অভিনেতাদের এ ধরনের আক্রমণ করে কী লাভ হয়? শুধুমাত্র জনপ্রিয় বলেই কি একজনকে যা ইচ্ছে বলা যায়?

সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাজ নিয়ে সমালোচনা করুন৷ প্রত্যেক পেশার সম্মান আছে৷ অহেতুক পরিবার বা ব্যক্তিজীবন নিয়ে নোংরা মন্তব্য করবেন না। প্রত্যেককে সম্মান করা উচিত। ’

দিনের পর দিন এসব নেতিবাচক কথাবার্তায় রাশমিকা নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন। নিজের অভিনয় ক্ষমতা নিয়েও সন্দিহান হয়ে উঠছিলেন। এমনকি নিজের যোগ্যতা সম্পর্কেও সঠিক মূল্যায়ন করার শক্তি তার হারিয়ে গিয়েছিল। এ সময়টি অত্যন্ত কঠিন ছিল। নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করে স্বাভাবিক জীবনের পথে ফেরা, পুনরায় নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ ছিল না।

সমস্ত নেতিবাচক ঘৃণ্য মন্তব্যকে পেরিয়ে, মানসিক অবসাদকে হারিয়ে রাশমিকা আজ স্বপ্রতিভায় ভাস্বর। রাশমিকা তার ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘মানুষ হিসেবে কিছু খুঁত রয়েছে সবার মধ্যেই। কিছু বিষয় অপারগতা থাকবে। কিন্তু এমন এক সময় আসবে, যখন তুমি বুঝবে, লোকে কী বলবে, তার থেকেও তোমার ব্যাপ্তি অনেক বেশি। তুমি শক্তিশালী, তুমি সুন্দর এবং তুমি একাই পারবে। নিজের মধ্যে এই বোধ এলেই আর কেউ তোমাকে থামাতে পারবে না। ’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্য লোকে কী বলবে সেই বিষয়ে আমরা অতিরিক্ত ভাবনা-চিন্তা করি। মানুষ অন্য মানুষের প্রশংসা, ভালোবাসা চায়। কিন্তু তোমার নিজের জীবনের মালিক তুমি। জীবনকে কীভাবে চালাবে, তা ঠিক করার দায়িত্ব শুধুই তোমার৷’

আত্মবিশ্বাসই রাশমিকার এগিয়ে চলার মূলমন্ত্র। ২০১৬ সালে কন্নড় ছবিতে অভিনয় করে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। খুব শিগগির বলিউডে সিদ্ধার্থ মালহোত্রর বিপরীতে অভিনয় করবেন রাশমিকা ‘মিশন মজনু’ ছবিতে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?