স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৬ এপ্রিল।। রাজ্যে শীঘ্রই সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাস চালু হতে যাচ্ছে। সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের এক প্রতিনিধিদল আজ নজরুল কলাক্ষেত্রের ক্যাম্পাস যৌথ পরিদর্শন করে সচিবালয়ের অনুষ্ঠিত এক সভায় এই ফিল্ম ইনস্টিটিউট স্থাপনের সম্ভাবনার কথা ব্যক্ত করেন।
সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস, সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ইনচার্জ সমীরণ দত্ত ও অন্যান্য সদস্যগণ এবং পূর্ত দপ্তর ও তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। নজরুল কলাক্ষেত্রের ক্যাম্পাস পরিদর্শনের পর সভায় সত্যজিৎ ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ইনচার্জ সমীরণ দত্ত জানান, নজরুল কলাক্ষেত্রের ক্যাম্পাসে ক্লাসরুম, এডিটিং ল্যাব ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা রয়েছে।
নজরুল কলাক্ষেত্রের ক্যাম্পাসে যে সমস্ত ব্যবস্থাদি রয়েছে তাকে ভিত্তি করে ফিল্ম অ্যাপ্রেসিয়েশন, স্ক্রিন অ্যাক্টিং ও ডকুমেন্টরি তৈরির মতো স্বল্প সময়ের কোর্স অবশ্যই শুরু করা যেতে পারে। এরমধ্যে প্রথমেই বেসিক কোর্স হিসেবে ফিল্ম অ্যাপ্রেসিয়েশন কোর্স শুরু করা যেতে পারে। এই কোর্সের জন্য প্রয়োজনীয় ক্লাসরুম এবং স্ক্রিনিং হল এখানে রয়েছে। এই কোর্সে পড়াশুনা করতে ইচ্ছুক রাজ্যের যুবক যুবতীদের রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উৎসাহিত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। ডিরেক্টর ইনচার্জ শ্রীদত্ত আরও বলেন, ৩টি স্বল্প সময়ের কোর্স শুরু করার পর ধীরে ধীরে প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর উন্নয়ন হলে এখানে দীর্ঘ সময়ের বিভিন্ন কোর্স চালু করার চিন্তা ভাবনা করা হবে।
ত্রিপুরায় সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট স্থাপনের বিভিন্ন পরিকাঠামো যেমন স্যুটিং ফ্লোর, সাউন্ড প্রুফ রুম, লাইটিং ব্যবস্থা ইত্যাদি গড়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকারের নিকট প্রস্তাব দেন তিনি। সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, ছোট করে হলেও রাজ্যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে রাজ্য সরকার কাজ করছে। এই লক্ষ্যে এখানে জিৎ রায় ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট স্থাপন করা প্রয়োজন। এই স্টিটিউট স্থাপিত হলে রাজ্যের যুবক যুবতীদের বিভিন্ন কোর্সের প্রশিক্ষণ নিয়ে রাজ্য ও বহির্রাজ্যে গিয়ে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবে। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের অনেক ছেলেমেয়েরই অভিনয় ও মডেলিং-এ উৎসাহ রয়েছে।
পাশাপাশি রাজ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানকে ভিত্তি করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরজন্য প্রথমেই বিভিন্ন স্বল্প সময়ের কোর্স চালু করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট স্থাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর উন্নয়নে নজরুল কলাক্ষেত্রে ক্যাম্পাস পরিদর্শনের জন্য একটি প্রযুক্তিগত এক্সপার্ট টিম পাঠানোর বিষয়ে ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ইনচার্জের নিকট তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস আহ্বান জানান।
সচিবালয়ে সভার পূর্বে রাজ্য সরকার ও সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের এক প্রতিনিধিদল নজরুল কলাক্ষেত্রের ক্যাম্পাসটি যৌথভাবে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, রাজ্যে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউট স্থাপনে সরকার আন্তরিক। অভিনয় থেকে শুরু করে সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের যুবক যুবতী যাদের প্রতিভা রয়েছে তাদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যেই রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ।
রাজ্যে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউট স্থাপন হলে যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সংস্কৃতিগত দিক দিয়ে রাজ্য আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। পরিদর্শনকালে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস, সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ইনচার্জ সমীরণ দত্ত, অন্যান্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।