অনলাইন ডেস্ক, ৩১ মার্চ।। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে ‘নতুন যুগে’ এবং ‘নতুন উচ্চতায়’ নিয়ে যেতে প্রস্তুত বেইজিং। ওয়াং বলেন, চীন ও রাশিয়া একসঙ্গে নতুন আন্তর্জাতিক বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে।
বুধবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেন তিনি। সেখানেই ঠিক হয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরো বাড়ানো হবে এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে দুই দেশ একসুরে কথা বলবে। দুই দেশের পক্ষ থেকে সেই ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ বলেন দুই দেশই ‘আধিপত্যবাদ এবং শক্তি প্রয়োগের রাজনীতির’ বিরোধী এবং ‘জাতিসংঘের মূলনীতি’ ধারণ করে।
লাভরভ বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে উত্তেজনা কমাতে ‘প্রতিশ্রুতি-বদ্ধ’ এবং মস্কো শান্তি আলোচনা অব্যাহত রাখবে এবং সেই সঙ্গে ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ’ রাখবে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন চীন ‘সবসময় ইতিহাসের সঠিক দিকে অবস্থান নিয়েছে’। ইউক্রেন সংকট সম্পর্কে তিনি বলেন এটির একটি ‘জটিল ইতিহাস’ রয়েছে। তিনি বলেন, ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের যে বিরোধ চলছে, ইউক্রেন পরিস্থিতি তারই পরিণতি।
ওয়াং বলেন, রাশিয়া সহ অন্যরা ইউক্রেনে ‘বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয় এড়াতে’ যে চেষ্টা করছে তাকে চীন সমর্থন করে।
রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইউক্রেনে সেনা অভিযানের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতেও অস্বীকার করে চলেছে চীন।
ইউক্রেনে সেনা অভিযানের পর এই প্রথম রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ চীন সফর করছেন। পাকিস্তান সহ আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়ে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠকে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে গেলেও লাভরভের সঙ্গে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র বৈঠক হয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর দেওয়া খবর অনুযায়ী লাভরভ চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ইউক্রেন পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন। সে সময় দুই মন্ত্রী চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
গত কয়েকবছর ধরেই রাশিয়া ও চীন ক্রমশ কাছাকাছি এসেছে। ইউক্রেন নিয়ে সেই সম্পর্ক আরো জোরালো হয়েছে। কারণ, রাশিয়ার নিন্দা করা দূর কি বাত, চীন এর জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর নীতিকেই দায়ী করেছে। তারা জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি বরং ভোটদানে বিরত থেকেছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিস্তারে আলোচনা করেছেন। দুজনেই মনে করেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা নিষেধাজ্ঞায় কোনো ফল হয়নি। বরং এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলোই বিপাকে পড়েছে।
রাশিয়া ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে কোনো সীমা নেই। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘রাশিয়া-চীন সম্পর্কের কোনো সীমা নেই। তেমনই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে, সুরক্ষা নিশ্চিত করতে, দাদাগিরির বিরোধ করার ক্ষেত্রেও চেষ্টার কোনো সীমা নেই’।
তিনি বলেছেন, চীন ও রাশিয়ার সম্পর্কের মধ্যে কোনো সংঘাত নেই, কোনো তৃতীয় পক্ষকে তারা টার্গেট করে না আর কোনো পক্ষে তারা ঝুঁকে নেই।