অনলাইন ডেস্ক, ২৯ মার্চ।। ইউক্রেন বেলারুশ সীমান্তে এক শান্তি আলোচনায় অংশ নেবার সময় রুশ ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো সন্দেহ করছে।
মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়ে বলা হয়, ইউক্রেনের দুজন শান্তি আলোচকও আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ফুটবল ক্লাব চেলসি এফসির মালিক কয়েকদিন চোখে ব্যথা ও অস্বস্তি এবং শরীরের চামড়া উঠে যাওয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে ভুগেছেন। তিনি এখন সেরে উঠেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে একটি বৈঠকের পর আব্রামোভিচের শরীরের বিষপ্রয়োগের অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয়। এসব লক্ষণের মধ্যে ছিল চোখ লাল হওয়া, মুখ ও হাতের চামড়া খসে যাওয়া এবং অবিরাম ব্যথা।
সূত্র জানিয়েছে, আব্রামোভিচ এখন সুস্থ আছেন এবং যুদ্ধ বন্ধে তিনি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগ ওঠার পর একজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছিলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শারীরিক উপসর্গগুলো ‘পরিবেশগত’ কারণে হয়েছে, বিষপ্রয়োগের কারণে নয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট অফিসের একজন কর্মকর্তা জোভকাভা বিবিসিকে বলেছিলেন, তিনি যদিও আব্রামোভিচের সাথে কথা বলেননি, কিন্তু ইউক্রেনের আলোচক দলের সদস্যরা সবাই সুস্থ আছেন।
তবে, অন্য আরেকজন এই অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছেন।
ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল জানায়, ইউক্রেনের শান্তি আলোচক দলের সদস্য দেশটির সাংসদ রুস্তেম উমেরভের অবস্থার উন্নতি হয়েছে এখন।
এ ঘটনার ফলে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্য আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আব্রামোভিচের ভূমিকা সামনে এসেছে। আলোচনায় তার অবস্থান ঠিক কী সেটি পরিষ্কার নয়, কিন্তু রাশিয়ার এই অলিগার্কের একজন মুখপাত্র এর আগে বলেছিলেন, আলোচনায় তার প্রভাব ‘সীমিত’।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, আব্রামোভিচ তার দেশে রাশিয়ার হামলা সীমিত করতে তাকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা গ্রুপ বেলিংক্যাট বলেছে, আব্রামোভিচ এবং কয়েকজন আলোচক যে সব উপসর্গে ভুগেছেন, তা ‘রাসায়নিক অস্ত্রের বিষক্রিয়ার মতো’। এসব উপসর্গের মধ্যে রয়েছে, ‘চোখ ও ত্বকে জ্বালাপোড়া এবং চোখে তীক্ষ্ণ ব্যথা’।
ওই ঘটনার ১০ দিন পর আব্রামোভিচকে প্রথম জনসমক্ষে দেখা যায় ১৪ই মার্চ তেলআবিব এয়ারপোর্টে।
এ মাসের শুরুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র এবং তেলআবিব আব্রামোভিচের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যদিও ঘনিষ্ঠতার কথা বরাবর অস্বীকার করে এসেছেন আব্রামোভিচ।
আব্রামোভিচের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
মার্চের ৩ তারিখে রোমান আব্রামোভিচ রাশিয়া এবং ইউক্রেনের শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে পৌঁছান। বিবিসির নিরাপত্তা সংবাদদাতা ফ্র্যাঙ্ক গার্ডনার বলেছেন, এর পর সেখানে যা ঘটেছে তা রীতিমতো ‘রহস্যজনক’।