অনলাইন ডেস্ক, ২৪ মার্চ ।। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেনকে সাহায্যের পরিমাণ বাড়ানো হবে। আগে ৫০০ মিলিয়ন ইউরোর সামরিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১ বিলিয়ন ইউরোর সামরিক সাহায্য করা হবে। ইতিমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠিয়েছে।
ওদিকে, কিছুদিন আগে আমেরিকা জানিয়েছিল, ইউক্রেনকে ৮০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সাহায্য দেওয়া হবে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক রাশিয়ার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জার্মান গণমাধ্যম ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, আমেরিকা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানোর জন্য জাহাজে তোলা হয়েছে। তবে সেই প্যাকেজে কী কী অস্ত্র আছে, তা তিনি জানাতে পারেননি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ন্যাটোর জরুরি বৈঠক বসছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য ব্রাসেলস পৌঁছে গেছেন। বৃহস্পতিবার ন্যাটোর বৈঠকের পর তিনি জি ৭ এর বৈঠকে যোগ দেবেন। এরপর তার পোল্যান্ড যাওয়ার কথা। সেখানে সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে তার আলোচনা করার কথা পোল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে।
ন্যাটোর বৈঠকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ। পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সেনা দ্বিগুণ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এদিনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার কথা। শুধু তাই নয়, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়ায় চারটি নতুন সেনার ট্রুপ পাঠানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘেও একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ইউক্রেনের তোলা একটি প্রস্তাব নিয়ে সাধারণ পরিষদে আলোচনা হওয়ার কথা। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে রাশিয়াকে ‘যুদ্ধ’ বন্ধ করতে হবে। জাতিসংঘের প্রধান ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভোটাভুটির মাধ্যমে বৃহস্পতিবারই প্রস্তাবটি পাশ করানো হতে পারে।
এর আগে ইউক্রেন নিয়ে একাধিক প্রস্তাব পেশ করেছে জাতিসংঘ। শেষ ভোটাভুটিতে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট পড়েছিল ১৪১টি। বিপক্ষে ভোট পড়েছিল পাঁচটি, যার মধ্যে রাশিয়াও ছিল। ভোট দেয়নি ভারত বাংলাদেশ-সহ ৩৫টি দেশ। মনে করা হচ্ছে, এদিনের প্রস্তাবটিও বিপুল ভোটে পাশ হয়ে যাবে। কিন্তু জাতিসংঘ প্রস্তাব পাশ করলেই রাশিয়া লড়াই বন্ধ করবে, এমন মনে করার কারণ নেই।
ন্যাটোর দাবি, এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনে সাত থেকে ১৫ হাজার রাশিয়ান সৈন্যের মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ান সেনারা লড়াইয়ের মানসিকতা ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে। তাদের বক্তব্য, কিয়েভে রাশিয়ান সেনাদেরকে ইউক্রেনের যোদ্ধারা ঘিরে ফেলেছে। তবে এই তথ্য ঠিক কি না, তা যাচাই করা যায়নি।
অন্যদিকে মারিওপোলে রাশিয়ার আক্রমণ চলছে। লাগাতার সেখানে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। মারিওপোল থেকে পালিয়ে আসা এক ব্যক্তি বিবিসিকে জানিয়েছেন, শহরে আর প্রায় কিছুই অবশিষ্ট নেই। কিন্তু বন্দরের বিশেষ ক্ষতি হয়নি। সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রেও দেখা গেছে, মারিওপোলের বন্দর অক্ষত আছে।
রাশিয়ানা সেনারা ক্রিমিয়া হয়ে মারিওপোলের মধ্য দিয়ে পূর্ব ইউক্রেন দখল করতে চেয়েছিল বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। কিন্তু মারিওপোলে তাদের প্রথম প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়। মারিওপোল ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনো সেখানে ক্রমাগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনা এবং সাধারণ মানুষ।