অনলাইন ডেস্ক, ২৩ মার্চ।। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। তবে তার মধ্যে কোভিড-১৯ এর মৃদু উপসর্গ দেখা গেছে এবং তিনি সুস্থ আছেন বলেও জানিয়েছেন হিলারি।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) এক পরীক্ষায় তার দেহে করোনা ধরা পড়ে বলে জানিয়েছেন ৭৪ বছর বয়সী সাবেক এ মার্কিন ফার্স্ট লেডি।
করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়ে দেওয়া এক টুইটে হিলারি লেখেন, গুরুতর অসুস্থতার বিরুদ্ধে টিকা থেকে পাওয়া সুরক্ষার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। যারা এখনও টিকা নেননি অনুগ্রহ করে দ্রুত করোনার টিকা নিয়ে নিন।
তিনি আরও জানান, তার স্বামী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনেরও করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। অবশ্য তার ফল নেগেটিভ এসেছে। তবে, তিনি কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
২০১৬ সালে ডেমোক্রেট থেকে মনোনয়ন নিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করেন হিলারি ক্লিনটন। সে বার তাকে পরাজিত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকিও দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। যে কারণে ন্যাটো সম্মেলনে অংশ নিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সফরসঙ্গী হওয়া থেকে তাকে বিরত থাকতে হয়।
গত ১৩ মার্চ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও জানিয়েছিলেন তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
উদ্বেগ জাগিয়ে ক্রমশ আমেরিকায় কোভিড সংক্রমণের চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে ওমিক্রনের বিএ.২ ধরনটি। একই চিত্র দেখা যাচ্ছে পশ্চিম ইউরোপের ক্ষেত্রেও, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এমনটাই দাবি।
সান দিয়েগোর একটি জিনোমিক্স সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, আমেরিকায় বর্তমানে যত সংখ্যক কোভিডে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন, তাদের মধ্যে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছেন বিএ.২ ভেরিয়েন্টে। গত দুই সপ্তাহের কোভিড পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে এই চিত্র। নিউ ইয়র্কেই গত এক সপ্তাহে ফের বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অ্যান্টনি ফাউচি জানিয়েছেন, ওমিক্রনের থেকে অনেক বেশি সংক্রামক করোনার এই নতুন ধরন। তবে এখনও সেটি প্রাণঘাতী হয়ে ওঠেনি বলেই জানা গিয়েছে। আক্রান্তদের উপসর্গও খুব একটা ভয়াবহ নয় বলেই এখনও পর্যন্ত খবর।
ওমিক্রনের এই নতুন ধরনের সংক্রমণে আশঙ্কার চিত্র দেখা যাচ্ছে ব্রিটেনেও। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সে দেশে কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ শতাংশের দেহেই রয়েছে নতুন ভেরিয়েন্টের উপস্থিতি। আর তার পরেই বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। যদিও আক্রান্তের উপসর্গ খুব মারাত্মক নয়, কিন্তু এই স্ট্রেনটিতে সম্ভাবনা রয়েছে বার বার আক্রান্ত হওয়ার।
ক্রমবর্ধমান আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিপদে আছে চীনও। ‘জ়িরো কোভিড’ পলিসি নিয়ে চলা দেশটির একের পর এক শহরে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে। রাতারাতি ৯ লাখ বাসিন্দা থাকেন এমন একটি শহরে লকডাউন ঘোষণা করেছে চীন। মঙ্গলবার চার হাজারেরও বেশি কোভিড আক্রান্ত ধরা পড়েছে। আগেও শেনজেন নামে একটি শহর লকডাউন করেছে চীন। ওমিক্রনের ধাক্কায় বেসামাল চীনের বেশ কিছু এলাকা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ওমিক্রনের প্রথম ধরন অর্থাৎ বিএ.১ এবং এই নতুন বিএ.২ ধরনের মধ্যে মূলত জিনগত সিকোয়েন্সে ফারাক রয়েছে। রয়েছে কিছু অ্যামাইনো অ্যাসিড ও স্পাইক প্রোটিনের পার্থক্যও। যে ফারাকের কারণে এই ধরনটি বেশি ছড়াচ্ছে।