স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৫ ফেব্রুয়ারী।। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঠিক দিশায় ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে চলছে।
রাজ্যের অর্থনীতির বিকাশে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র কৃষি ও কৃষিসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলির উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। এতে রাজ্যের কৃষকদের আয় বেড়েছে।
এখন রাজ্যে কৃষকদের আয় মাথাপিছু ১১,০৯৩ টাকা হয়েছে। যেটা আগে ছিল ৬ হাজার টাকা। আজ আগরতলার কৃষ্ণনগরে ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের প্রধান কার্যালয়ে রক্তদান শিবির, নতুন দু’টি এসি বাস পরিষেবা চালু এবং টিআরটিসি ও টিইউটিসিএল’র ওয়েবসাইট ও লোগোর উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে এই প্রথম ত্রিপুরায় সরকারি বাস পরিষেবায় চালু হল ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম। এখন থেকে ফোন পে’ অ্যাপের মাধ্যমে টিআরটিসি এবং টিইউটিসিএল বাসগুলিতে ই-পেমেন্ট পরিষেবার সুযোগ পাবেন যাত্রীরা।
আজ এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ‘নিয়ত, নীতি ও নিয়ম’- এটাই বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী। স্বচ্ছ মানসিকতা নিয়েই মানুষের কল্যাণে ও রাজ্যের সার্বিক বিকাশে কাজ করছে সরকার। দলমত নির্বিশেষে সরকারি উন্নয়নমূলক কাজ রূপায়ণ করা হচ্ছে। কাজ করতে গেলে সুস্থ মানসিকতা থাকতে হয়। এই মানসিকতা নিয়েই রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার কাজ করছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার স্বার্থে সিবিএসই ধাঁচের ১০০টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের ব্যবস্থা করছে সরকার। এজন্য রাজ্য বাজেট থেকে ৫০০ কোটি টাকার সংস্থান করা হয়েছে। যা রাজ্যে আগে কখনো হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণেও স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করছে এই সরকার। নিয়মের বাইরে গিয়ে কখনো কাজ করে না সরকার। যা কাজ রূপায়িত হচ্ছে সবকটিই স্বচ্ছতার মাপকাঠি নিয়েই হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৮ সাল থেকে নতুন সরকার পরিচালনা শুরু হয়। সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে জনসাধারণ কি চায় এবং ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ তৈরি করার জন্য আগামী ২৫ বছর রাজ্য কোন দিশাতে চলবে, কোথায় যাবে বা কি করবে তার লক্ষ্য, নির্দেশিকা পূর্ণ রাজ্য দিবসের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজ্য সরকার রাজ্যের মানুষের সামনে তুলে ধরেছে।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে পরিবহণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, মানব জীবনের শ্রেষ্ঠ দান রক্তদানের কোন মূল্যায়ণ হয় না। রাজ্যে বর্তমানে রক্তদান মিশন মুডে চলছে।
বিভিন্ন ক্লাব, সংস্থা বেসরকারি সংগঠন স্বেচ্ছা রক্তদানে এগিয়ে আসছে। তিনি আরও বলেন, একটা সময় টিআরটিসি মৃতপ্রায় অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আজ টিআরটিসি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এজন্য কর্মচারিদের বিশেষ ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে চারজনকে স্মারক উপহার প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এরা হচ্ছেন রক্তদান শিবিরের পরিচালক ডা. সুব্রত লস্কর, ইঞ্জিনিয়ার প্রবীর দে ও দুজন শ্রেষ্ঠ কর্মচারি বিজন দেববর্মা (হেড ক্লার্ক, টিআরটিসি) ও সিদ্ধার্থ দত্ত (এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, টিইউটিসিএল)।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, খাদি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্য, টিআইডিসি’র চেয়ারম্যান টিংকু রায়, পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব এল এইচ ডার্লং, টিআরটিসি’র এমডি রাজেশ কুমার দাস সহ অন্যান্যরা। পরে মেগা রক্তদান শিবির ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ।
পাশাপাশি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আগরতলা থেকে খোয়াই এবং আগরতলা থেকে সাব্রুম দুটি রুটে অত্যাধুনিক দুটি এয়ার কন্ডিশন বাস পরিষেবার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। রক্তদান শিবিরে স্বেচ্ছা রক্তদান করেন ১৮ জন।