স্টাফ রিপোর্টার, মোহনপুর, ১৮ ফেব্রুয়ারী।। গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হলেই দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় হয়। এই লক্ষ্যেই গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কৃষির বিকাশে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে।
আজ মোহনপুর ব্লকের বিদ্যাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চবটিতে কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্র এবং আঞ্চলিক কৃষি কার্যালয়ের দ্বারোদঘাটন করে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় একথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করে তোলার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। রাজ্যেও এই প্রকল্পগুলি রূপায়িত হচ্ছে।
উভয় সরকারেরই লক্ষ্য কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলা। কিষাণ সম্মাননিধি যোজনায় কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বছরে ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যে এই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াই লক্ষ কৃষক উপকৃত হয়েছেন। অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, যে সমস্ত কৃষকের নিজের নামে জমি নেই তারা যাতে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কৃষি ঋণ পেতে পারেন সেজন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন।
এর সুফল এই অংশের কৃষকরা ইতিমধ্যেই পেতে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, রাজ্যের কৃষকদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
রাজ্যের উৎপাদিত ফসল এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নেওয়ার জন্য কিষাণ রেল চালু করা হয়েছে। গত বছর রাজ্যের প্রায় ৩ লক্ষ কৃষক প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার আওতায় এসেছেন।
ইতিমধ্যেই কৃষকদের কাছ থেকে সহায়কমূল্যে ধান কেনা হচ্ছে। কৃষকদের সার, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার পাশাপাশি তাদের চাষ করার মাটি পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজ্য সরকার ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি কৃষকদের জন্য উপযুক্ত বাজারেরও ব্যবস্থা করেছে। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরার উৎপাদিত আনারস, কাঁঠাল, গন্ধরাজ লেবু বিদেশে রপ্তানি হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজ্যের মা বোনরা যাতে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন সে লক্ষ্যে রাজ্য সরকার কাজ করছে। বিভিন্ন স্বসহায়ক দলের মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা সরকার দেব, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, উদ্যান ও ভূমি সংরক্ষণ দপ্তরের অধিকর্তা ড. ফণীভূষণ জমাতিয়া।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোহনপুরের কৃষি তত্ত্বাবধায়ক ইউ সাহা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহনপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান রীণা দেববর্মা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সদস্যা কাজল কর, কৃষি কলেজের অধ্যক্ষ ড. টি কে মাইতি, সমাজসেবী যোগেন্দ্র দেববর্মা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অতিথিগণ কৃষকদের মধ্যে সয়েল হেলথ কার্ড এবং কলাছড়ার প্রণামী স্বসহায়ক দলকে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করেন। এছাড়া সকালে কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বামুটিয়া ব্লকের উত্তর লক্ষ্মীলুঙ্গায় স্টোরেজ অ্যান্ড সিড প্রসেসিং ইউনিটের উদ্বোধন করেন।