।। দয়াল মজুমদার।। সাধারণ জনগণ যদি উন্নয়নে অংশগ্রহণ করেন তাহলে বিকাশের পথ সুগম হয়। বর্তমানে রাজ্যের যুবক যুবতীরা উন্নয়নের কাজে অংশ নিয়ে নিজেরা স্বনির্ভর হচ্ছেন। তেমনি অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করছেন তারা।
অমরপুর ব্লকের রাঙামাটি পঞ্চায়েতের উত্তর রাঙামাটি এলাকার ইতিহাসে স্নাতক যুবক প্রণব দাস এর অন্যতম উদাহরণ। শুধু যে সরকারি চাকরি করেই প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায় সেটা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে দেখিয়েছেন রাঙামাটির প্রণব। ঐ যুবক নিজেরই প্রায় সাড়ে ছয় কানি জমিতে কঠোর পরিশ্রম আর অনেক যত্ন করে তৈরি করেছেন কাশ্মিরী আপেল কুল এবং মোসাম্বি ফলের বাগান।
বাগানে কাশ্মিরী আপেল কুল গাছ রয়েছে ৪৭৫টি এবং মোসাম্বি গাছ রয়েছে ৩৮০টি। আলোচনায় তিনি জানান, প্রতিটি স্কুলের চারা ৭২ টাকা এবং মোসাম্বির প্রতিটি চারা ১১৫ টাকা করে কলকাতা থেকে এনেছেন। তবে অমরপুর কৃষি মহকুমা কার্যালয়ের কৃষি তত্ত্বাবধায়ক সুজিত দাস বিভিন্ন সময়ে বাগান পরিদর্শন করে উৎসাহ সহ বিভিন্ন বিষয়ে উপযুক্ত পরামর্শ প্রদান করেছেন।
তিনি আরও জানান, সামাজিক মাধ্যমে তিনি দেখেছেন বাংলাদেশের এক যুবক মহ: সেলিম সরকারের ফলের বাগান। ৬ হাজার ২০০টি বিভিন্ন জাতের আম, ড্রাগন ফল, মোসাম্বি ও মালটা ফলের গাছ রয়েছে ঐ বাগানে। বাগান থেকে বছরে ঐ ব্যক্তির আয় প্রায় ৬ কোটি টাকা। তার বাগান দেখে উৎসাহ পেয়ে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমানে প্রণব দাসের কুল বাগানের ৯ মাস বয়সের প্রতিটি কুল গাছে গড়ে প্রায় ১০ কেজি করে কুল রয়েছে।
প্রণববাবুর হিসেবে ৪৭৫টি গাছে ৪ হাজার ৭৫০ কেজি কুল রয়েছে। বর্তমানে কুল পাকার সময় এসেছে। তিনি আনন্দের সঙ্গে জানালেন বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি কুল কমপক্ষে ৮০ টাকা পাইকারি দামে বিক্রি হচ্ছে। হিসেব করে তিনি দেখছেন কুল বিক্রি করে তিনি এ বছর ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। আর মোসাম্বি গাছের বয়স মাত্র ১ বছর হয়েছে। আগামী ২ বছরের মাথায় মোসাম্বি বাগান থেকেও ভালো মুনাফা আসবে বলে আশা করছেন তিনি।
কথা প্রসঙ্গে প্রণব দাস জানালেন, এ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে আগামী বছর প্রতিটি কুল গাছ থেকে কমপক্ষে ৫০ কেজি করে কুল পাবেন। বিশাল জায়গা জুড়ে কাশ্মিরী কুলের বাগান কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় এবং বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ পরিদর্শন করেছেন। নিজের চেষ্টা, পরিশ্রম, আন্তরিকতায় ফলের বাগান তৈরি করে স্বাবলম্বী হওয়া প্রণব দাস আজ অমরপুরের অনুপ্রেরণা।