অনলাইন ডেস্ক, ৮ ফেব্রুয়ারী।। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নরেন্দ্র মোদি সবথেকে বেশি জোর দিয়েছেন ডিজিটালাইজেশন এবং ক্যাশলেস ভারত গড়ার দিকে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি সভাতেই প্রায় নিয়ম করে ডিজিটাল ভারত গড়ার কথা বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতেই বিহারের বেটিয়া রেলস্টেশনে খোঁজ মিলল দেশের প্রথম ডিজিটাল ভিখারির (Digital’ Beggar)। বিহারের বেটিয়া রেলস্টেশনে সকলের কাছেই পরিচিত রাজু পাটেল। বছর চল্লিশের রাজুকে চেনেন না এমন কোনও বাসিন্দা নেই ওই এলাকায়। তবে রাজু কোন গণ্যমান্য ব্যক্তি নন। বরং তিনি একজন সাধারণ ভিখারি।
ছোট থেকেই রাজু বেটিয়া স্টেশনে ভিক্ষা করে আসছে। তবে রাজু আর পাঁচজন সাধারণ ভিখারির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ রাজু হলেন দেশের প্রথম ডিজিটাল ভিখারি। তার কাছে মোবাইল ব্যাংকিং থেকে শুরু করে কার্ড সোয়াইপ মেশিন সবকিছুই আছে। রাজু অন্য ভিখারিদের মত কখনওই হাত পেতে টাকা নেন না।
তার গলায় ঝুলছে একটি বোর্ড। যেখানে রয়েছে একটি কিউআর কোড।যারা রাজুকে ভিক্ষা দিতে চান তাঁদের প্রথমে ওই কিউআর কোডটি নিজের মোবাইল ফোনে স্ক্যান করতে হয়। তারপর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রাজুকে ভিক্ষা দিতে হয়। এটাই রাজুর বৈশিষ্ট্য। রাজু স্পষ্ট জানিয়েছে, সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একজন বড় ভক্ত।
বলতে গেলে প্রধান মন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়েই সে এভাবে ভিক্ষা করার পথ বেছে নিয়েছে। রাজু জানিয়েছে, সে শুধুমাত্র ডিজিটাল পেমেন্ট গ্রহণ করে। সে ছোটবেলা থেকেই এই বেটিয়া স্টেশনে বসেই ভিক্ষা করে। কি কারণে সে নগদ টাকার পরিবর্তে এভাবে ডিজিটাল ভিক্ষা নেয়?
এ প্রশ্নের উত্তরে রাজু জানিয়েছে, আজকের ডিজিটাল যুগে সে দেখেছে, অনেকেই আর নগদ টাকা নিয়ে পথে বের হন না। তাই উপায় থাকলেও তাকে ভিক্ষা দিতে পারতেন না অনেকেই। করণ যাত্রীরা অনেকেই বলেন, আজকের দিনে জি পে, ফোন পে, গুগল পে-র মত মোবাইল ওয়ালেট থাকায় আর তাঁরা নগদ অর্থ নিয়ে পথে বের হন না।
তাই দিন দিন তার ভিক্ষা করে পাওয়া অর্থের পরিমাণ কম ছিল। সে কারণেই তিনি ভিক্ষা করার পদ্ধতিও বদল করেছেন। ভিক্ষা করার জন্য রাজু একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং একটি ই-ওয়ালেট খুলেছে। রাজুর স্থায়ী ঠিকানা অবশ্য এই বেটিয়া রেল স্টেশন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বছরে এক কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির ক্ষমতা দখল করেছিলেন।
তবে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না করলেও তিনি ডিজিটাল ভারত গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছে রাজু নামে এক ভিখারি। দেশের শিক্ষিত নবীন প্রজন্মের কাছে রাজুই অনুপ্রেরণা, এমনটাই টিপ্পনি কেটেছেন অনেকেই।