স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৩০ জানুয়ারি।। রাজ্য সরকারের গ্রুপ এ, বি ও সি ক্যাটাগরির অককবরকভাষী কর্মচারীদের ককবরক ভাষা শেখার জন্য আজ থেকে অনলাইনে ককবরক স্পিকিং কোর্স চালু হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ আজ দুপুরে শিক্ষা ভবনের হলঘরে এই অনলাইন ককবরক স্পিকিং কোর্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
প্রথম ব্যাচে রাজ্যের ৮ জেলার ১০০ জন সরকারি কর্মচারী অনলাইনে ককবরক ভাষা শেখার সুযোগ পেয়েছেন। এরমধ্যে টিসিএস এবং আইএএস অফিসারও প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে রয়েছেন। রিসোর্সপার্সনগণ তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন প্রতি মাসের রবিবার, দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবার। ৩ মাস ২ সপ্তাহে প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণের কাজ সমাপ্ত হবে।
ককবরক স্পিকিং কোর্সের উদ্বোধন করে শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ এই পদক্ষেপকে রাজ্য সরকারের এক যুগান্তকারী উদ্যোগ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ককবরক ভাষার বিকাশে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্যে অককবরক ভাষাভাষী যারা আছেন তাদের কাছে ককবরক ভাষাকে আরও বেশী করে পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথমে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ককবরক স্পিকিং কোর্স চালু করা হলেও পরে সাধারণ জনগণের জন্যও এধরণের কোর্স চালুর বিষয়ে দপ্তর বিবেচনা করবে। তিনি সাংবাদিকদেরও ককবরক ভাষা শেখার আহ্বান জানান। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার এই স্বল্প সময়ে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত মোট ১১৬টি বিদ্যালয়ে ককবরক ভাষাকে একটি বিষয় হিসেবে চালু করেছে। ২২টি কলেজে ২২ জন ককবরক সহকারি অধ্যাপক নিয়োগের জন্য সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন এ বিষয়ে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি বলেন, ককবরক সরকারি ভাষা। এ ভাষা যাতে সহজে জনগণের কাছে পৌঁছায় সেলক্ষ্যে ১৪ জন ককবরক পিজিটি শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া এবছরের ককবরক দিবসে তৃতীয় শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী ক্লাসের জন্য ককবরক হ্যান্ডবুক চালু করা হয়েছে। যাতে শিক্ষকগণ ককবরক ক্লাস নিতে পারেন। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নাম ককবরক ভাষায় করা হচ্ছে।
আগে প্রেস রিলিজগুলি শুধু বাংলায় হতো। এখন বাংলা, ককবরক ও ইংরেজীতে হয়। সরকারি প্রকল্পগুলির প্রচার এখন বাংলার পাশাপাশি ইংরেজী ও ককবরক ভাষাতে চালু করা হয়েছে। যারা ককবরক সাহিত্যে বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদেরকে এবছর পুরস্কৃত করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধু ককবরক ভাষার উন্নয়ন নয়, রাজ্য সরকার কুকি, গারো, মিজো, হালাম, চাকমা, বিষ্ণুপ্রিয়া এবং মণিপুরী এই ৭টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাষার উন্নয়নেও বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য রাজ্যে একটি ‘মাইনর রিসার্চ প্রোগ্রাম চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উদ্বোধনের পর শিক্ষামন্ত্রী শ্রীনাথ অনলাইনে প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের পর প্রশিক্ষনার্থীদের দপ্তরের পক্ষ থেকে শংসাপত্র দেওয়া হবে। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ককবরক ভাষা উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক ডা. অতুল দেববর্মা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ককবরক ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ভাষা দপ্তরের অধিকর্তা নগেন্দ্র দেববর্মা। উপস্থিত ছিলেন দপ্তরের উপ অধিকর্তা সব্যসাচী সিং সহ দপ্তরের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকগণ।