অনলাইন ডেস্ক, ২৬ জানুয়ারী।। রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি জানিয়েছেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন না।
হারিরি পরিবার ১৯৯০ সালের গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে লেবাননের সুন্নি রাজনৈতিক মাঠে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল।
লেবাননের সাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িক কোটার ভিত্তিতে সংসদীয় আসন বরাদ্দ করা হয়। আর সুন্নি আইন প্রণেতাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই হারিরির ফিউচার মুভমেন্ট পার্টির সদস্য।
সোমবার এক টেলিভিশন ভাষণে হারিরি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে ইরানের প্রভাব, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের সিদ্ধান্তহীনতা, অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের কারণে লেবাননের জন্য কোনও ইতিবাচক সুযোগের কোনও জায়গা নেই।
আমি আমার রাজনৈতিক জীবন এবং ফিউচার মুভমেন্ট পার্টির কর্মকাণ্ড স্থগিত করছি। আগামী নির্বাচনে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি না, ফিউচার মুভমেন্ট পার্টিও করবে না’।
হারিরি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের জনগণ ও জাতির সেবায় থাকব। কিন্তু প্রথাগত অর্থে শাসন, প্রতিনিধিত্ব বা রাজনীতিতে সরাসরি ভূমিকা বা দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা’।
আগামী ১৫ মে লেবাননে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে দেশব্যাপী গণবিক্ষোভের পর এবং ২০২০ সালের আগস্টে বৈরুত বন্দরের ভয়াবহ বিস্ফোরণে রাজধানীতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনার পর লেবাননের মানুষ এই প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেবে।
লেবানন বহুদিন ধরে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটেও ভুগছে। যার ফলে দুই বছরের একটু বেশি সময়ের মধ্যে দেশটির জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে গেছে।
সোমবার হারিরি বলেন যে, তার লক্ষ্য ছিল ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে যাতে আরেকটি গৃহযুদ্ধ শুরু না হয় সে ব্যবস্থা করা এবং লেবাননের জনগণের অবস্থার উন্নতি করা। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ এড়ানোর জন্য তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে যে সমঝোতা করেছেন তার ফলে তিনি অর্থনীতিকে উন্নত করার সক্ষমতা হারিয়েছেন।
‘এই চুক্তিগুলো করার ফলে আমার ক্ষমতা কমে গেছে এবং লেবাননের জনগণের জীবনকে আরও উন্নত করতে আমি ব্যর্থ হয়েছি’। ব্যক্তিগত সম্পদ, স্থানীয় ও আঞ্চলিক মিত্রদের হারানোর ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতিহাস এর বিচার করবে।