Purchase: আইনি বাধা না থাকা সত্ত্বেও হরিদ্বারের বেশ কয়েকটি জায়গায় মুসলিমরা আজও জায়গা কিনতে পারেন না

 

 

অনলাইন ডেস্ক, ২০ জানুয়ারি।। হরিদ্বারে সম্পত্তি কিনতে পারেন না মুসলিমরা। এ কথা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। বিশেষ করে যারা কাশ্মীরে সম্পত্তি কিনতে পারতেন না বলে কেঁদে আকুল হতেন– তারা হরিদ্বারের এই খবর শুনে যে ঢোক গিলবেন– তা নিয়ে বিশেষ সংশয় নেই। কাশ্মীরে এখন আর ৩৭০ নেই। দেশের যেকোনও বাসিন্দা এখন সেখানে সম্পত্তি কিনতে পারেন। কিন্তু কোনও আইনি বাধা না থাকা সত্ত্বেও হরিদ্বারের বেশ কয়েকটি জায়গায় মুসলিমরা আজও জায়গা কিনতে পারেন না। কিনতে পারেন না সম্পত্তি।

 

এমনিতেই হরিদ্বার দেশ-বিদেশের অগণিত হিন্দুর কাছে আলাদা মর্যাদা রাখে। সেখানে গঙ্গায় ডুব দিয়ে বহু হিন্দু নিজেদের পবিত্র জ্ঞান করেন। তবে আজকের দিনে হরিদ্বার নিয়ে দেশ তথা বিদেশে যে তুমুল চর্চা হচ্ছে তা গেরুয়াধারী বিদ্বেষীদের জন্য। হিন্দুদের উসকানি দিতে হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে মুসলিমদের গণহারে হত্যার নিদান দিয়েছিলেন নরসিংহান্দ। মুসলিমদের ভারতের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে আহ্বান জানানো হয়েছিল ধর্ম সংসদ থেকে। বলা হয়েছিল– মুসলিমদের বয়কটের কথা।

 

হরিদ্বারের কানহালে এবং মায়াপুর এলাকায় কোনও মুসলিমের প্রবেশাধিকার নেই। হিন্দু তীর্থযাত্রীদের প্রাণকেন্দ্র এই দুই এলাকায় দেশ বিদেশের পর্যটকরা ভিড় করেন।

 

তবে হরিদ্বারের অন্য জায়গায় তাদের প্রবেশে নিষেধজ্ঞা নেই। প্রশ্ন এই নিষেধাজ্ঞায় বা কেন  তার আইনগত ভিত্তি আছে কি? নাকি সবটাই গায়ের জোরে? এর উত্তর মেলেনি।

 

হরিদ্বার প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রাজেন্দ্র নাথ গোস্বামীকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন– কয়েকশো মুসলিম প্রতিদিন হরিদ্বার শহরে আসেন। তাঁরা ব্যবসা করেন। তাদের ক্রেতা বলতে হিন্দুরাই। এমনকী মন্দির সংলগ্ন এলাকাতেও তাঁরা আসেন। ব্যবসা এখানে হিন্দু মুসলিমের মধ্যে সম্প্রীতি অটুট রয়েছে। কেউ চেষ্টা করলেও তা ভাঙতে পারবে না।

 

সাংবাদিক দিলশাদ আলি কাজ করেন হিন্দি দৈনিকে। তিনি জানান– হিন্দুরা এখানে গঙ্গায় ডুব দেওয়ার পর মাথা মুণ্ডন করেন। মুণ্ডনের কাজ মুসলিমরাই করেন। এই নাপিতরা প্রতিদিন গ্রাম থেকে হরিদ্বার শহরে আসেন। রুজি-রুটির টানে। হরিদ্বারের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি– অটোমোবাইল মিস্ত্রি এমনকী বাড়ি বাড়ি প্লাম্বিংয়ের কাজ সবই করেন মুসলিমরা। অনেক মুসলিম মিস্ত্রি বাড়ি ভাড়া নিয়েও থাকেনদ। অনেকে হিন্দুদের দোকানে কাজ করেন। গঙ্গাজল বহন করার যে পাত্র– তাও মুসলিমরাই বানান। জানান দিলশাদ।

 

প্রশ্ন হল–  তাহলে নরসিংহানন্দরা মুসলিমদের সমূলে দেশ থেকে উৎপাটনের কথা বলছে কেন? কেনই বা মুসলিমদের গণহারে হত্যার এমন বিধান দিলেন তাঁরা?  সেটা কি কেবলই ভোট বাজারে বিজেপির ফায়দা করে দেওয়া– নাকি মুসলিমদের মনে নতুন করে ভয় ধরানো? তার উত্তর অবশ্য স্পষ্ট মেলেনি। তবে হরিদ্বারে মুসলিম জনসংখ্যা নেহাত কম নয়। হরিদ্বারে মোট জনসংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ। যার মধ্যে মুসলিম সংখ্যা প্রায় ৭ লক্ষের কিছু বেশি। হিন্দুদের জনসংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ।

 

নরসিংহান্দ এবং তাদের ভক্তকুলের ধারণা মুসলিমরা জনসংখ্যায় তাদের অতিক্রম করে যাবে। আরএসএস মাঝে মধ্যে হিন্দু মনে ভয় ধরাতে এই তথ্য দিয়ে থাকে। তবে শেষ আদমশুমারি স্পষ্ট করেছে যে– মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার একেবারেই হিন্দুদের মতোই। মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বরং কমেছে। কিন্তু তার পরও হিন্দুদের মনে আতঙ্ক তৈরি করার জন্য এটা বিদ্বেষীদের খুব পছন্দের সস্তা অপপ্রচার। হরিদ্বারে মুসলিম নিধনের যে নিদান নরসিংহানন্দ দিয়েছেন তা কি আদৌ দেশের হিন্দুদের প্রভাবিত করবে? এখনও সে উত্তর মেলেনি। শাহ ও মোদি মারাত্মক এই বিদ্বেষের কথা শুনেও নীরব। তা বিদ্বেষপন্থীদের আলাদা করে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

 

নরসিংহানন্দের এই বিদ্বেষ ভাষণের বিরুদ্ধে হরিদ্বারের কাছাকাছি জায়গা জোয়ালপুরের মুসলিম যুবক গুলবার খান প্রথম এফআইআর করেন। হরিদ্বারে সংখ্যায় মুসলিমরা নেহাত কম নয়। অথচ এখানে মুসলিমদের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। শিখ এবং খ্রিস্টানদের সংখ্যাও এখানে নেহাতই কম। তারপরও তারা নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বানিয়েছে। হাসপাতাল বানিয়েছে। কিন্তু মুসলিমদের সেসব কিছু নেই। রোগীরা– বিশেষ করে মুসলিম মহিলা রোগীরা এখানে চিকিৎসকের হেনস্থার শিকার হন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী নঈম কুরেশিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি এর সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন। উত্তরাখণ্ডের সিনিয়র রাজনীতিবিদ তিনি। এখানে মুসলিম বিধায়কও রয়েছেন। কিন্তু আত্মমর্যাদার জীবন কাটানো কাকে বলে তা বোধকরি এখানকার মুসলিমরা জানেন না। মুলিমরা কেন সেখানে আত্মমর্যাদার স্বাক্ষর বহন করতে পারছে না?  তার সদুত্তর মেলেনি।

 

ujjivan
sbi life
hero
hdfc
dailyhunt
bazar kolkata
adjebra

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?