অনলাইন ডেস্ক, ৮ জানুয়ারি|| বোমা ঘূর্ণিঝড়’ নামে পরিচিত শীতকালীন তুষারঝড় শুক্রবার উত্তর-পূর্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তুষারের চাদরে ঢেকে ফেলেছে। এর ফলে কয়েকটি প্রদেশজুড়ে শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে, স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদরা এই ঘটনাকে শীতকালীন হ্যারিকেন বলে আখ্যায়িত করেছেন। বায়ুর চাপ ২৪ ঘ্ন্টার মধ্যে যখন কমপক্ষে ২৪ মিলিবার কমে যায় এবং ভারী পতন ও শক্তিশালী বাতাস নিয়ে আসে তখন এমনটা ঘটে।
‘বোমা ঘূর্ণিঝড়’টি কেনটাকি, ন্যাশভিল এবং টেনেসি, তারপরে ভার্জিনিয়া এবং ওয়াশিংটন ডিসি এলাকায় তুষারপাত ঘটিয়ে উত্তর দিকে আটলান্টিক সমুদ্র তীরের দিকে এগিয়ে যায়।
অ্যাকুওয়েদারের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ টম কাইনস সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘দ্রুত উপকূলের কাছাকাছি ঘনীভূত হলে এটি পূর্ব উপকূলের শহরগুলোর জন্যও একটি বড় ঝড় হতে পারে’।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস নিউইয়র্ক সিটির লাগার্ডিয়া বিমানবন্দরে আট ইঞ্চির বেশি তুষারপাত রেকর্ড করেছে। ৩৪০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। আরও ফ্লাইট বাতিল করা হতে পারে।
পাশের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে ২২০টি ফ্লাইট এবং বোস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৫০টি বাতিল করা হয়েছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) বলেছে যে, কানাডার সীমান্তে নিউইয়র্কের চিকতোওয়াগায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তুষারপাত রেকর্ড করা হয়েছে- ১৮ ইঞ্চি।
কয়েক ইঞ্চি তুষারপাতে ম্যাসাচুসেটসে শত শত স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু নিউ ইয়র্ক সিটিতে, পাবলিক স্কুলগুলো খোলা রাখা হয়েছে।
করোনভাইরাস মহামারীর কারণে আগের বন্ধের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়া দরকার’।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নষ্ট করার জন্য আর কোন দিন নেই এবং বাচ্চাদের বাড়িতে রাখার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আগামী বছর পর্যন্তও পড়বে’।
নিউ জার্সির গভর্নর ফিল মারফি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সেখানকার কিছু স্কুল শুক্রবারকে ‘তুষার দিন’ বলে ডাকতে শুরু করেছে।
মারফি টুইটারে লিখেছেন, ‘আমরা সকল নিউ জার্সিবাসীকে রাস্তা থেকে দূরে থাকার, আপডেট থাকার এবং নিরাপদ থাকার জন্য অনুরোধ করছি’।
আবহাওয়াবিদ কাইনস বলেছেন, শুক্রবার রাতে নোভা স্কশিয়া এবং কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের কিছু অংশে হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রা এবং উচ্চ বাতাস সহ ঝড়টি উত্তর দিকে এগিয়ে যাবে।
তুষারঝড়ে সবচেয়ে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য। তুষার ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটেছে দেশটিতে এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় ৫০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক বর্তমানে রয়েছেন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়।
ওদিকে, গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার ফলে রাজধানী ওয়াশিংটন, ক্যালিফোর্নিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে।
বন্যার কারণে রাজধানী ওয়াশিংটনের প্রধান সড়কগুলোর অধিকাংশই ডুবে গেছে। ফলে মার্কিন রাজধানীতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে চরমভাবে।