অনলাইন ডেস্ক, ২৫ ডিসেম্বর।। লুধিয়ানা আদালত চত্বরে বিস্ফোরণের ঘটনায় সামনে এল মারাত্মক তথ্য। গত ২৩ ডিসেম্বর আচমকাই বিস্ফোরণ হয় লুধিয়ানা জেলা আদালতে দুপুর ১২টা ২২ মিনিট নাগাদ। ওইদিনই আদালতে আইনজীবীদের ধর্মঘট ছিল। সেই সময় আচমকা আদালত চত্বরে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়। জখম হয় পাঁচজন।
এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার পিছনে ছিল পুলিশ কর্মীর হাত। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, যে দুজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছেন। মৃতের নাম গগনদীপ সিং।প্রাক্তন পুলিশকর্মী।
তিনি একসময় হেড কন্সটেবল ছিলেন। ২০১৯ সালে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এমনকী মাদক পাচার কাণ্ডে তাঁর মদদ প্রমাণিত হওয়ায়, দুই বছরের জন্য জেলেও যেতে হয় তাকে। চলতি বছরেই গগনদীপ সিং জেল থেকে ছাড়া পান।
লুধিয়ানা আদালত চত্বরে রেকর্ডরুমের পাশের শৌচালয়ের বিস্ফোরণ হয়। সমস্ত কিছু আগে থেকে পরিকল্পনা করেই এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আর এই বিস্ফোরণে যাবতীয় প্রমাণ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পুলিশ সূত্রে খবর, সমস্ত প্রমাণ লোপাটের জন্যই এই কাজ করা হয়েছিল।
শৌচাগারে বিস্ফোরণটি হওয়ায় জলের পাইপ ফেটে সমস্ত তথ্য ধুয়ে বেরিয়ে যায়। মনে করা হচ্ছে, খলিস্তানি সংগঠন জড়িত রয়েছে এই হামলার পিছনে। তবে বিস্ফোরক কোথা থেকে এসেছিল, তা এখনও জানা যায়নি।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, আদালত চত্বরে যে বিস্ফোরণ হয় সেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল আরডিএস্ক, বা আইআইডি।
ফরেন্সিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, লুধিয়ানার আদালত চত্বরে বিস্ফোরণ ঘটাতে ব্যবহার করা হয়েছিল দুই কেজি আরডিএক্স। প্রায় ২ কেজি আরডিএক্স ব্যবহার করা হয়েছিল।
সূত্রের দাবি, যে সময়ে আদালতের ভিতরে বিস্ফোরণ হয়েছিল, ঠিক সেই সময়েই গগনদীপের ফোনেও বিস্ফোরণ হয়।
কিন্তু তাঁর কাছে একটি ইন্টারনেট ডঙ্গল ছিল, সেটি দিয়েই অনলাইনে কারোর কাছ থেকে বিস্ফোরণটি কীভাবে ঘটাতে হবে, সেই সম্পর্কে গগনদীপকে যাবতীয় তথ্য দিচ্ছিল অন্য কেউ। তবে অভিজ্ঞতা না থাকায় হঠাৎ বোমাটি ফেটে যায়। মৃত ওই ব্যক্তির সিম কার্ড ও ওয়্যারলেস ডঙ্গলের মাধ্যমেই পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে। পরে পরিবারের সদস্যরাও তাঁর হাতের ট্যাটু দেখেই দেহ শনাক্তকরণ করেছেন।
NIA সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের পিছনে বাব্বার খালসা নামক পাকিস্তান সমর্থিত একটি খলিস্তানি সংগঠনের হাত রয়েছে। আদালত চত্বরে বিস্ফোরণের পিছনে আর কোনও উদ্দেশ্য ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সামনেই পঞ্জাব নির্বাচন। তার আগে এই ধরনের ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র সরকার। পঞ্জাব মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নী আগেই জানিয়েছিলেন, দোষীকে ছাড়া হবে না।