অনলাইন ডেস্ক, ২৪ ডিসেম্বর।। জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি সভানেত্রী মেহেবুবা মুফতি বলেছেন, বিজেপি ও সংঘের গডসের রাজনীতি আমাদের দেশে চলবে না। বিদ্বেষ ও ধর্মের নামে মানুষকে বিভক্ত করার রাজনীতি নিয়ে দেশ এগোতে পারছে না এবং জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না।
জম্মুর সুনজওয়া এলাকার মসজিদ গ্রাউন্ডে পিডিপি কর্মীদের এক কনভেনশনে দেওয়া বক্তব্যে মেহবুবা বলেন, ‘দেশকে স্বাধীন করতে নেহরু ও গান্ধির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করা মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহকে দেশের মানুষ পছন্দ করে না এজন্য যে, তিনি হিন্দু-মুসলিম রাজনীতি করে ধর্মের নামে আমাদের দেশকে ভাগ করেছেন।
তিনি বলেন, গান্ধিজীর নেতৃত্বে যখন দেশে স্বাধীনের সংগ্রাম চলছিল, তখন জনসঙ্ঘের লোকেরা ব্রিটিশদের পা চাটত। এই লোকেরা ধর্মের নামে রাজনীতি করে এবং আজ ক্ষমতায় এসে আমাদের দেশপ্রেম শেখায়, অথচ সত্যি এটাই যে, এই লোকেরা জনসংঘের অফিসেও দেশের পতাকা লাগাত না। তারা শুধু হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে লড়াই বাধিয়ে দিতে জানে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তানে একজন জেনারেল জিয়াউল হক ইসলামকে সঠিকভাবে বাস্তবায়নের নামে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, কিন্তু কী হলো, তিনি জনগণের হাতে বন্দুক তুলে দিলেন। পাকিস্তান এখনো তার ফল ভোগ করছে। বিজেপি ও জনসঙ্ঘীরাও সেই পথে চলছে।
মেহেবুবা বলেন, আমাদের এখানে গণপিটুনিতে অভিযুক্ত লোকেদের গলায় ‘মালা’ পরানো হচ্ছে। পাকিস্তানেও শ্রীলঙ্কার নাগরিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল কিন্তু সেখানকার প্রধানমন্ত্রী এর নিন্দা করেছিলেন। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিন্দা পর্যন্তও করেন না।
তিনি বলেন, দেশে ২৫ কোটি মুসলিম, কিন্তু তাদের মুসলমান নয়, বাবর ও আওরঙ্গজেবের বংশধর বলা হচ্ছে! বিদ্বেষের রাজনীতি দিয়ে কী দেশ এগিয়ে যেতে পারে? দেশের অনাহারের অবস্থা এমন যে নেপাল, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পরিস্থিতিও আমাদের চেয়ে ভালো। জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করার পরে, বিজেপি সরকার দুধের নদী বয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল’ কিন্তু এখানে বেকারত্বের হার ২২ শতাংশে উন্নীত করার কাজ করেছে।
ইন্দিরা গান্ধি ও অটল বিহারী বাজপেয়ী পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে দেশকে জয়ের পথে নিয়ে গেলেও লাদাখে চীনের হাজার হাজার কানাল জমি দখল করা সত্ত্বেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মুখ খোলে না। ৩৭০ ধারা অপসারণের নামে, তারা অবশ্যই উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং দেশের অন্যান্য রাজ্যে ভোট চাচ্ছে। তারা শুধু ঘৃণা ছড়াচ্ছে বলেও পিডিপি সভানেত্রী মেহেবুবা মুফতি মন্তব্য করেন।