অনলাইন ডেস্ক, ২৩ ডিসেম্বর|| ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর স্ত্রী ও দেশটির ফার্স্ট লেডি ব্রিজিত ম্যাখোঁ পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন বলে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নেটিজেনদের অনেকেই দাবি করছেন, ম্যাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত একজন ট্রান্সজেন্ডার বা রুপান্তরকামী নারী। তাদের দাবি, পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন ব্রিজিত এবং ওই সময় তার নাম ছিল জ্যঁ-মিশেল ত্রোগনিউক্স।
তবে এ ধরনের প্রচারণাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন ৬৮ বছর বয়সী ব্রিজিত ম্যাখোঁ।
এ ঘটনায় তিনি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার স্বামী ইমানুয়েল ম্যাখোঁর বয়স এখন ৪৪ বছর।
ফ্রান্স প্রশাসনও একে গুজব বলে আখ্যায়িত করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের গুজব ছড়ানোর নেপথ্যের লোকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন ব্রিজিত ম্যাখোঁ।
যারা তাকে একজন ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করতে চায়, তাদের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা থামাতে আইনি প্রক্রিয়ায় হাঁটতে চান ব্রিজিত। তিনি তার আগের স্বামীর ঔরসে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তার সন্তানরাও এখন সবাই প্রাপ্তবয়স্ক।
উগ্র ডানপন্থীদের একটি ওয়েবসাইটে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম এই অভিযোগ করা হয়। এরপর ষড়যন্ত্রতাত্বিকরা তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
ফরাসি মিডিয়া জানায়, নাতাচা রে নামে একজন নারী একটি অতি-ডানপন্থী জার্নালে লেখা এক নিবন্ধে প্রথম এই গুজব ছড়ান। লিবারেশন সংবাদপত্রের মতে, টিকাবিরোধী, কোভিড নিয়ে সন্দেহবাদী এবং অতি-ডানপন্থী কর্মীদের একটি দল অনলাইনে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করলে এবং ইউটিউবে ভিডিও শেয়ার করলে তা ছড়িয়ে পড়ে।
অনেকের প্রশ্ন, ব্রিজিট ম্যাঁখো কেন এত হাস্যকর একটি বানোয়াট গুজব দমন করার জন্য আইনের আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন।
আদালতে মামলা দায়ের করলে বরং লোকে ভাববে সত্যিই হয়তো তার লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে কোনো গোপন বিষয় আছে। দমন করার কিছু আছে। অন্যথায়, তারা কেন এটিকে এত গুরুত্ব সহকারে নেবে?
কিন্তু সত্যিকার অর্থে এমন কোনো প্রমাণ নেই যা দেখে কতিপয় মূর্খের বাইরে কেউ ব্রিজিট এর পুরুষ হয়ে জন্ম গ্রহণ করার পর নারী হওয়ার গল্পটিকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করবে। গল্পটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলেই যে সবাই বিশ্বাস করবে তা নয়। আসলে সামনে ফ্রান্সের জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বিরোধীরা এই গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে।
২০১৭ সালে তার স্বামী ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই মিসেস ম্যাখোঁকে লক্ষ্য করে নানা ট্রল করা হচ্ছে। এর আগে এই দম্পতির বয়সের ব্যবধান নিয়েও ট্রল করা হয়েছিল। তাদের বয়সের ব্যবধান প্রায় ২৫ বছর।
২০২২ সালের বসন্তে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। ম্যাখোঁ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেননি যে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কিনা। তবে ব্যাপকভাবে আশা করা হচ্ছে তিনি প্রার্থী হবেন।
আগামী নির্বাচনে তিনি প্রথাগত ডানপন্থী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ভ্যালেরি পেক্রেসি এবং ফরাসি টিভি ব্যক্তিত্ব এবং লেখক এরিক জেমুর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে পারেন। এরিক জেমুর অতি-ডানপন্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন।