Review: পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের বর্ষ শেষ পর্যালোচনা, পড়ুন প্রকল্পগুলির বিস্তারিত তথ্য

অনলাইন ডেস্ক, ২৩ ডিসেম্বর।। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান তথা উৎপাদন, পরিশোধন, বন্টন ও বিপণন, আমদানি, রপ্তানি এবং পেট্রোপণ্য সংরক্ষণের প্রাথমিক দায়িত্ব পালন করে। আমাদের অর্থনীতিতে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের আমদানির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

 

সকলের কাছে জ্বালানী পৌঁছে দেওয়া, জ্বালানী সাশ্রয় ও জ্বালানী নিরাপত্তার মত অগ্রাধিকারের বিষয়গুলিতে মন্ত্রক দেশে পেট্রোলিয়াম সম্পদের অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়াতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। চলতি বছরে মন্ত্রকের গৃহীত উদ্যোগগুলি নিম্নরূপ :

 

প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা (পিএমইউওয়াই) –

 

২০১৬-র মে মাসে এই কর্মসূচির সূচনা হয়। সূচনার পর ৮ কোটি দরিদ্র মহিলাকে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গত ১০ আগস্ট সারা দেশে আরও ১ কোটি নিখরচায় রান্নার গ্যাস সংযোগ দিতে যোজনার দ্বিতীয় পর্বের সূচনা করেন। গত পয়লা ডিসেম্বর পর্যন্ত এই কর্মসূচিতে ৮০ লক্ষ ৫০ হাজার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রক এই কর্মসূচির অগ্রগতির ওপর দৈনিক ভিত্তিতে নজরদারি করছে।

 

রান্নার গ্যাস রিফিল –

 

গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আরও বাড়াতে রান্নার গ্যাস বুকিং-এর ক্ষেত্রে গ্রাহকদের পছন্দের বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, গ্রাহকরা তাঁর পছন্দসই ডিস্টিবিউটারের কাছে রান্নার গ্যাস বুকিং করতে পাচ্ছেন।

 

ভর্তুকি বিহীন রান্নার গ্যাস সংযোগে সুবিধা –

 

নতুন রান্নার গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও সরল করতে গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটাররা ভর্তুকি বিহীন রান্নার গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন। এই সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহককে তার পরিচিতিপত্র ও স্বঘোষণা জমা করতে হয়।

 

নতুন তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন কূপগুলির মানোন্নয়ন –

 

এখনও পর্যন্ত নতুন নয়টি এধরণের কূপ নগদিকরণ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এরমধ্যে তিনটি কূপ ওএনজিসি-র এবং বাকি ছটি পিএসসি-র। পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক বাজারজাত জ্বালানীর সম্মতির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নীতি-নির্দেশিকা ২০১৯-এর নভেম্বর মাসে সংশোধন করেছে। এরফলে, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের খুচরো ব্যবসায় বেসরকারি ক্ষেত্রের বিনিয়োগ বাড়বে।

 

গ্যাস গ্রিড –

 

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১ হাজার ৭৩৫ কিলোমিটার গ্যাস সরবরাহ পাইপলাইন বসানো হয়েছে।

 

ইথানল মিশ্রিত পেট্রোল কর্মসূচি –

 

২০২০-২১ ইথানল সরবরাহ বর্ষে তেল বিপণন সংস্থাগুলি পেট্রোলে মেশানোর জন্য গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩০২ কোটি ৩০ লক্ষ লিটার ইথানল উৎপাদন করেছে। ২০২১-২২ ইথানল সরবরাহ বর্ষে সি-শ্রেণীর মোটা জাতীয় গুড় থেকে নির্গিত ইথানলের দাম স্থির হয়েছে লিটার প্রতি ৪৬ টাকা ৬৬ পয়সা। বি-শ্রেণীর মোটা জাতীয় গুড় থেকে নির্গিত ইথানলের দাম স্থির হয়েছে লিটার প্রতি ৫৯ টাকা ৮ পয়সা। আখের রস / আখের সিরাপ থেকে নির্গত ইথানলের দাম স্থির হয়েছে লিটার প্রতি ৬৩ টাকা ৪৫ পয়সা। অন্যদিকে, নষ্ট হয়ে যাওয়া দানাশস্য থেকে নির্গত ইথানলের দাম স্থির হয়েছে লিটার প্রতি ৫২ টাকা ৯২ পয়সা।

 

জৈব জ্বালানী মিশ্রণ কর্মসূচি –

 

পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী গত ৪ মে নতুন দিল্লিতে ইন্ডিয়ান অয়েলের তিকরিকালান টার্মিনাল থেকে প্রথম জৈব জ্বালানী মিশ্রিত ডিজেল ভিত্তিক ইউসড কুকিং অয়েল সরবরাহের সূচনা করেন। তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে বিক্রি করা জৈব জ্বালানীর ওপর জিএসটি হার গত ১ অক্টোবর থেকে ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

 

নিয়ন্ত্রণমূলক বাধ্যবাধকতা হ্রাস –

 

পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রে সহজে ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়নে আইনি বাধ্যবাধকতা হ্রাস করা হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রণালী সরলিকরণ করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার চলতি ২০২১-এ বিশেষ অভিযান গ্রহণ করে ২৭৬টি ক্ষেত্রে আইনি বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে।

 

মন্ত্রকের কাজকর্মে অগ্রগতির সূচক –

 

দেশে গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৯.৮৮ মিলিয়ন মেট্রিকটন তেল এবং ২২.৭৭ বিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস উত্তোলন হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৫৬ হাজারের বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকায় ১০৫টি অনুসন্ধান ব্লকের বরাত দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, উজ্জ্বলা যোজনার দ্বিতীয় পর্বে ৮০ লক্ষ ৫০ হাজার রান্নার গ্যাস সংযোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গত বছরের জুন মাসে দেশে গ্যাস এক্সচেঞ্জ ব্যবস্থার সূচনা হয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১ হাজার ৭৩৫ কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন বসানো হয়েছে।

 

পিএসএ প্ল্যান্ট স্থাপন –

 

কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের দরুণ উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন রাজ্যে অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতির বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী ১৩টি তেল রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা বিভিন্ন রাজ্যে ১১০টি হাসপাতালে প্রেসার স্যুইং অ্যাবর্জপশন (পিএসএ) অক্সিজনে প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যেই এধরণের ১০১টি প্ল্যান্ট থেকে অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে।

 

বৃহদায়তন কোভিড কেয়ার ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলা –

 

কয়েকটি শোধনাগারে চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত তরল অক্সিজেন উৎপাদন হয় না। কিন্তু লো-প্রেসারে অক্সিজেন পাওয়া যায়। অবশ্য, লো-প্রেসার অক্সিজেন তরলিকরণ বা পরিবহণ করা যায় না। তাই, লো-প্রেসার অক্সিজেনকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে কাজে লাগাতে রাজ্য সরকারগুলির সহায়তায় শোধনাগার সংলগ্ন চত্ত্বরে বৃহদায়তন কোভিড কেয়ার ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলা হয়েছে।

 

গ্যাসোলিন ডিসালফারাইজেশন ইউনিট –

 

প্রধানমন্ত্রী চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জ্বালানীর উৎকৃষ্টতা বজায় রাখতে একটি কর্মসূচির সূচনা করেন। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডের বঙ্গাইগাঁও শোধনাগারে ইন্ডম্যাক্স প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত পেট্রোলিয়ামের কোচি শোধনাগারে প্রপেলন ডিরাইভেটিভস পেট্রো কেমিক্যাল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন।

 

ujjivan
sbi life
hero
hdfc
dailyhunt
bazar kolkata
adjebra

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?