সিদ্ধার্থ শংকর পাল।। ডিজিট্যাল ইন্ডিয়ার ই-গভর্ন্যান্স পরিষেবার ফলে উপকৃত হচ্ছেন সারা দেশের সাথে মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের জনসাধারণরাও। ব্লকের সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা পেতে কোন না কোন সরকারি অফিসে যেতেই হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদরর্শীতায় সারা দেশের সাথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট পার্বত্য রাজ্য ত্রিপুরাতেও ‘ডিজিট্যাল ভারতের’ পরিষেবা পৌঁছে গেছে। যার সুফল পাচ্ছেন রাজ্যের সাধারণ জনগণ। কমন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা কাজে লাগিয়ে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে গ্রাম পাহাড়ে বসবাসকারী সাধারণ জনগণের কাছে। আমাদের ছোট পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যও এক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে। রাজ্যে চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৮টি জেলায় মোট ২ হাজার ৩৯৬টি কমন সার্ভিস সেন্টার খোলা হয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার ২৪টি রয়েছে গ্রামীণ এলাকায়। যাতে রাজ্যের প্রায় ১১০২টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজে বসবাসকারী লোকদের পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। এরূপ একটি কার্যকরী কমন সার্ভিস সেন্টার রয়েছে মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের রামকৃষ্ণপুর ভিলেজ এলাকায়। মুঙ্গিয়াকামী বাজারে অবস্থিত গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখার পাশেই রামকৃষ্ণপুর সিএসসি’র কার্যালয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই কমন সার্ভিস সেন্টারটির পথ চলা শুরু। সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত বিবিধ পরিষেবা এই সিএসসি’র মাধ্যমে স্থানীয় এলাকাবাসী পাচ্ছেন। যাতে উপকৃত হচ্ছেন মুঙ্গিয়াকামীর মতো প্রত্যন্ত ব্লক এলাকার জনজাতি জনগণ।
মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের কবিতা রিয়াং, অমলজয় রিয়াং, ভানু দেববর্মাদের মতো এক সময় সরকারি পরিষেবা যেমন পিআরটিসি, এসটি সার্টিফিকেট, আয়ুষ্মান কার্ড ইত্যাদি পরিষেবার জন্য তাদের অনেকটা পথ অতিক্রম করে তেলিয়ামুড়ায় যেতে হতো। যা ছিল তাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। কিন্তু বর্তমানে তাদের এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে রামকৃষ্ণপুর কমন সার্ভিস সেন্টারের জন্য। বর্তমানে এই সিএসসি-টি পরিচালনা করছেন স্থানীয় যুবক কৃষ্ণকুমার দেববর্মা। কৃষ্ণকুমারের বাবা একজন দিনমজুর। দিনমজুর পরিবারের ছেলে কৃষ্ণকুমার উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে এই পরিষেবা দেওয়ার কাজে যুক্ত হতে পেরে খুব খুশি। নিজস্ব উদ্যমে ডিজিট্যাল বিবিধ পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন এই সিএসসি’র মাধ্যমে। এলাকার অসংগঠিত শ্রমিকদের শ্রম বিমা যোজনা, জাতীয় ভাতা প্রকল্প, ই-শ্রম কার্ড ইত্যাদি বহু প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করানো হচ্ছে। যাতে করে গ্রামের সাধারণ জনজাতিদের আগামীদিনে এসব সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে কোন হয়রানী না হয়। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা, পিএম কিষান, আয়ুষ্মান ভারত কার্ড, পিআরটিসি, এসটি সার্টিফিকেট, কম্পিউটার ট্রেনিং, মোটর ইন্স্যুরেন্স, পেন কার্ড ইত্যাদি বিবিধ পরিষেবা এই সিএসসি’র মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে।
২০১৯ এর ইকোনমিক সেন্সাসেও ভূমিকা নিয়েছে এই কমন সার্ভিস সেন্টারটি। আইনত কোন
ব্যাপারে গ্রামের সহজ সরল জনজাতিরা যেন প্রতারিত না হয় তার জন্য এই সিএসসি-তে পাওয়া যাচ্ছে টেলি
ল পরিষেবা। যাতে করে আইনী পরামর্শ অতি সহজেই পাচ্ছেন এলাকাবাসী। মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের জনগণের জীবনমান
উন্নতিতে এই কমন সার্ভিস সেন্টার বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকার জনগণও যাতে এই ডিজিট্যাল পরিষেবার
সাথে নিজেদের যুক্ত করতে পারেন সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।