স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২০ ডিসেম্বর।। দেশে আজ ইজ অব লিভিং ও ইজ অব ডুয়িং বিজনেস পরিচিতি পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে। রাজ্যের বর্তমান সরকারও সেই ভাবনাকে সামনে রেখে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে। অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনায় অনলাইনের মাধ্যমে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এন ও সি) প্রদান ইজ অব লিভিং ও ইজ অব ডুয়িং বিজনেসেরই অঙ্গ।
আজ সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে অনলাইনে ফায়ার এনওসি প্রদান পরিষেবার আনুষ্ঠানিক সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ রাজ্যের নাগরিক সহ বানিজ্যিক ক্ষেত্রে যুক্তদের যাবতীয় পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও ফায়ার এনওসি পাওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হতো।
যা সরকারি ক্ষেত্র সহ বেসরকারী ব্যবসার ক্ষেত্রেও প্রভাব পরত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দ্রুততার সঙ্গে পরিষেবা প্রদানে স্বচ্ছতা এবং বিগত দিনের আবাসিক বা বানিজ্যিক ক্ষেত্রে যুক্তদের হয়রানি লাঘব করার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে ফায়ার এন ও সি প্রদান করার এই পরিষেবা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ফায়ার এন ও সি’র জন্য অধিকাংশ আবেদন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা থেকে আসে। তাই পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় প্রথমে এই অনলাইনে ফায়ার এন ও সি প্রদানের পরিষেবা চালু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সেলফ সার্টিফিকেশনের উপর ভিত্তি করে অনলাইনে ফায়ার এন ও সি দেওয়া হবে।
আবাসিক বিল্ডিং এর জন্য উচ্চতা ১৫ মিটার বা ১০০০ বর্গমিটার আয়তন এবং আবাসিক এলাকা ছাড়া বিল্ডিং-এর জন্য উচ্চতা ৮ মিটার এবং আয়তন ১০০ বর্গমিটার পর্যন্ত ক্ষেত্রেও সেলফ সার্টিফিকেশনের উপর ভিত্তি করে অনলাইনে ফায়ার এন ও সি দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ক্ষেত্রে যদি আবেদনকারীর প্রদত্ত সেলফ সার্টিফিকেট মিথ্যা হয়ে থাকে তাহলে তা আইনের উপযুক্ত বিধান অনুসারে বিচারের আওতায় আনা হবে।
তাই সেলফ সার্টিফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করা প্রয়োজন বলে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ফায়ার এন ও সি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনলাইনে ই-ডিস্ট্রিক্ট পোর্টালে গিয়ে আবেদন করতে হবে। ত্রিপুরা গ্যারান্টিড সার্ভিসেস টু সিটিজেনস অ্যাক্ট ২০২০ অনুসারে অনলাইনে ফায়ার এন ও সি ইস্যু করার জন্য সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে।
ডিজি লকারের মাধ্যমে দেশের যে কোন প্রান্ত থেকেও তা বের করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ড্রোন টেকনোলজির মাধ্যমে জমি চিহ্নিতকরণ, সীমানা নির্ধারণ সহ ম্যাপিং এর কাজ কেন্দ্রীয় সরকারের স্বামিত্ব অ্যাপের মাধ্যমে শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি জমির আাপও তৈরি করেছে রাজ্য সরকার।
জমি সংক্রান্ত সমস্ত বৈশিষ্ট নিয়ে এই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতবর্ষের মধ্যে ত্রিপুরাই একমাত্র রাজ্য যেখানে জমির পাট্টাপ্রাপকদের জমি চিহ্নিতকরণ সহ সীমানা নির্ধারণের জন্য বনাধিকার আপ তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে খুব কম সময়ে জমি চিহ্নিতকরণ সহ সীমানা নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র (অগ্নিনির্বাপক এবং জরুরী পরিষেবা) দপ্তরের মন্ত্রী রাম প্রসাদ পাল বলেন, আজ অনলাইনে ফায়ার এন ও সি প্রদানের পরিষেবা চালুর মধ্য দিয়ে রাজ্যে এক নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের মানুষের কথা ভেবেই এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফায়ার এন ও সি পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার সর্বক্ষেত্রেই স্বচ্ছতার সঙ্গে নাগরিকদের পরিষেবা প্রদানে বদ্ধ পরিকর।
এরই অঙ্গ হিসেবে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকারের অগ্নিনির্বাপক এবং জরুরী পরিষবা দপ্তর। অনুষ্ঠানে অগ্নি নির্বাপক এবং জরুরী পরিষেবা দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনায় অনলাইনের মাধ্যমে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) প্রদান করার বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজ্যের এন আই সি’র সিনিয়র টেকনিক্যাল ডিরেক্টর এ কে দে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অগ্নি নির্বাপক ও জরুরী পরিষেবা দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ও ডিরেক্টর অনিন্দ্য কুমার ভট্টাচাৰ্য্য।
উল্লেখ্য অনুষ্ঠানে অনলাইনে ফায়ার এনওসি’র জন্য আবেদনকারীদের হাতে ফায়ার এন ও সি সার্টিফিকেট তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, দপ্তরের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল সহ অতিথিগণ।