Vision-2047: ভিশন-২০৪৭ দু’দিনের কর্মশালা সমাপ্ত, ছাত্র যুবাদের চিন্তাধারাকেও ভিশনের সঙ্গে জুড়তে হবে, বললেন মুখ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৮ ডিসেম্বর।। রাজ্যের আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত নির্মাণের লক্ষ্যেই ‘ভিশন-২০৪৭ রূপরেখা তৈরী করা হয়েছে। তাই বিদ্যালয়স্তরে নবম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের এই ‘ভিশন-২০৪৭’-এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে অবন্ত করা আবশ্যক। এই ভিশন-২০৪৭ সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদেরও মতামত রাখার সুযোগ দিতে হবে। তবেই এই কর্মসূচির সফলতা আসবে। আজ প্রজ্ঞাভবনে আয়োজিত ‘ভিশন-২০৪৭’ শীর্ষক দু’দিনের কর্মশালার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভিশন-২০৪৭ কর্মসূচি সফল করতে হলে ছাত্র যুবাদের চিন্তাধারাকেও ভিশনের সঙ্গে ঘুড়তে হবে। ছাত্রছাত্রীদের রাজ্য সরকারের গৃহীত বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলি সম্পর্কে অকাত করা হবে। প্রয়োজনে বিদ্যালয়গুলির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের কর্মশালা আয়োজন করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী পরামর্শ দেন। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা তাদের ভবিষ্যত গড়ার ক্ষেত্রে প্রথম থেকে তৈরী হতে পারবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভিশন-২০৪৭ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকল মহিলাদের রোজগারের সঙ্গে যুক্ত করার প্রয়াস নিতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের মধ্যে ত্রিপুরাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থাপন করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। মহিলা স্বশক্তিকরণের ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ কার্যকরী হবে। আর স্বশক্তি সম্পন্ন মহিলারাই স্বনির্ভর ত্রিপুরা গড়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের যে কোনো রাজ্যের ভালো প্রকল্পগুলি সম্পর্কে অধ্যয়ণ করে রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে। রাজাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সুশাসন থাকা খুবই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে যে দেশে বা রাজ্যে সুশাসনের বিষয়ে ভালো কাজ করছে তা অনুসরণ করে রাজ্যের উন্নয়নের কাজে লাগাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘ওয়ান ডিস্ট্রিক্ট ওয়ান প্রোডাক্ট’ এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তা রাজ্যের প্রতিটি জেলায় গ্রহণ করতে হবে।

এক্ষেত্রে রাজ্যের যে জেলা যেসব জিনিসের জন্য বিখ্যাত সেগুলিকে লক্ষ্য করেই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে এই পরিকল্পনা রূপায়ণে প্রতিটি জেলার জেলাশাসকগণকে নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য বলতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি জেলায় যেসব পণ্য উৎপাদিত হবে সেগুলি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে কোন লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থাকলে সাফল্য নিশ্চয়ই আসবে।

রাজ্যের ভবিষ্যত প্রজনোর জন্য উন্নত ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে ভিশন-২০৪৭ কর্মসূচিকে সফলরূপ দিতে সবাইকে এগিয়ে আসার প্রয়োজন। প্রতিটি সেক্টরে যেসব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তার অগ্রগতির বিষয়ে নিয়মিত পর্যালোচনা করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ভিশন-২০৪৭-এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে রাজ্যের অন্তিম ব্যক্তিকেও অবগত করানোর উদ্যোগে প্রচারের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।

তার জন্য ভিশন-২০৪৭ কর্মসূচিতে প্রচারের বিষয়টিও যুক্ত করার জন্য প্রতিটি দপ্তরের প্রতি আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। দুই দিনের কর্মশালার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা ভিশন-২০৪৭, পঁচিশ বছরে রাজ্যকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে বিভিন্ন দপ্তরকে অধিক লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে নিতানতুন কৌশলের উপর মনোনিবেশ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরার প্রায় ৭০ শতাংশ স্থান বনাঞ্চল।

এই বনজ সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। একে বাদ দিয়ে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উন্নতির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে এবং রাজ্যের প্রায় প্রত্যেকটি পর্যটন স্থান বনাঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বন হল বাস্তুতন্ত্রের মূল চাবিকাঠি। উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার সংস্কৃতি হল বৈচিত্র্যময়। এখানে বিভিন্ন জাতি, জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষের সমাবেশ।

তাদের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতিও অনেকটাই বনের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই সকলকে বনজ সম্পদের রক্ষায় যত্নবান হতে হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি গাছ কাটার পাশাপাশি গাছ লাগানোর উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, আগামী ২৫ বছর পর রাজাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে প্রাথমিক ক্ষেত্র সহ উদ্যানপালন, মৎস্য চাষ, পর্যটন প্রভৃতি ক্ষেত্রের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে কাজ করতে হবে।

তবেই রাজাকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’ভিশন ২০৪৭- ত্রিপুরা’ শীর্ষক দু’দিন ব্যাপী কর্মশালা আজ প্রস্তাভবনের এক নং সভাকক্ষে বনমন্ত্রী সমাপ্ত হয়েছে। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে আগামী ২৫ বছরের রূপরেখা স্থির করে এই ভিশন- ২০৪৭ ত্রিপুরা শীর্ষক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

সমাপ্তি সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্ম, শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ, মেবার কুমার জমাতিয়া, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, তপশিলীজাতি কল্যাণ মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস, মুখ্য সচিব কুমার অলক, পুলিশের মহানির্দেশক ভি এস যাদব সিপার্ডের ডিজি তথা প্রধান সচিব শ্রীরাম তরণী কান্তি, ভিশন- ২০৪৭-র ৬টি ড্রাফটিং কমিটির সেক্টর চেয়ারপার্সনগণ, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সচিব, সচিব, অধিকর্তা সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ।সমাপ্তি সন্ধ্যায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশানের মাধ্যমে ভিশন-২০৪৭ এর ৬টি সেক্টরের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন শিপার্ডের ডিজি তথা প্রধান সচিব শ্রীরাম তরণী কান্তি।

এই ৬টি সেক্টরের মধ্যে প্রাথমিক ক্ষেত্র নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ড্রাফটিং কমিটির সেক্টর চেয়ারপার্সন তথা সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা সপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সেক্টর নিয়ে আলোচনা করেন ড্রাফটিং কমিটির সেক্টর চেয়ারপার্সন তথা রাজ্যের প্রধান মুখখ বন সংরক্ষক ড. ভি কে শৰ্মা।

শিল্প ও বিনিয়োগ সেক্টর নিয়ে আলোচনা করেন ড্রাফটিং কমিটির সেক্টর চেয়ারপার্সন তথা শিল্প ও বাণিজা সপ্তরের সচিব ডা. পি কে গোয়েল। পরিকাঠামো, যোগাযোগ ও লজিস্টিক সেক্টর নিয়ে আলোচনা করেন ড্রাফটিং কমিটির সেক্টর চেয়ারপার্সন তথ্য পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে। সামাজিক ক্ষেত্র সেক্টর নিয়ে আলোচনা করেন ড্রাফটিং কমিটির সেক্টর চেয়ারপার্সন তথা দিল্লি ত্রিপুরা ভবনের রেসিডেন্ট কমিশনার চৈতনা মূর্তি।

গভর্ন্যান্স সেক্টর নিয়ে আলোচনা করেন ড্রাফটিং কমিটির সেক্টর চেয়ারপার্সন তথা জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের প্রধান সচিব পুথিত আগরওয়াল। কর্মশালায় শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল না, বনমন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মুখ্যসচিব কুমার অলক প্রমুখ ‘ভিশন-২০৪৭ ত্রিপুরা বাস্তবায়ণে সকল দপ্তর ও রাজ্যবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।

ujjivan
sbi life
hero
hdfc
dailyhunt
bazar kolkata
adjebra

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?