অনলাইন ডেস্ক, ১৮ ডিসেম্বর।। মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করার প্রস্তাব পাশ করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। গত বছর স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানেই এর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, এর আগে নীতি আয়োগের তরফেও মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। মোদীও এই বিষয়ে বলেছিলেন, ‘মেয়েদের অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে, সঠিক বয়সে তাদের বিয়ে হওয়া জরুরি।’
কেন্দ্রের এই পদক্ষপের মধ্যে আলাদা করে কোনো যুক্তি খুঁজে পাননি অনেকেই।মেয়েদের ক্ষমতায়নে মোদি সরকারের কোনো ইতিবাচক ভূমিকা নজরে আসেনি। কেবল কংগ্রেস কিংবা তৃণমূল কংগ্রেস নয়, মিম সুপ্রিম আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও তেমনটি মনে করেন। তিনি বলেছেন মোদি সরকার পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা নিয়ে দেশ চালায়। একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন নারী-পুরুষের ভোটদানের ন্যূনতম বয়স নিয়েও।
ওয়াসি বলেছেন একটি মেয়ে একুশ বছরে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কিংবা সাংসদদের বেছে নিতে পারলে ওই বয়সে সে জীবনসঙ্গী বেছে নিতে পারেব না কেন। সেক্ষেত্রে ছেলেদেরও ভোটদানের বয়স ১৮ বছরে নামিয়ে আনা উচিত। অন্তত একটা সামঞ্জস্য তো থাকবে! তাছাড়া কেউ যদি ১৮ বছরে ভোট দিতে পারে, তাহলে ওই বয়সে তার বিয়েতে আপত্তি কেন ? এর পিছনে যুক্তি কি। প্রশ্ন তুলেছেন এই সাংসদ।
এদেশে ১৮ বছর বয়সে একজন সাবালক হয়।এই বয়সেই একজন স্বাধীনভাবে কোনও চুক্তি কিংবা ব্যবসার অধিকার পায়। তাহলে সে ভোট দিতে পারবে না কেন। কেনই বা তাহলে ওই বয়সে বিয়ে করা যাবে না। প্রশ্ন ওয়াইসির। তিনি বলেন মোদি সরকার মেয়েদের উন্নতির জন্য কিচ্ছু করেনি।
দেশে নাবালিকা বিয়ে খানিকটা কম হওয়া প্রসঙ্গে হায়দরাবাদের এই সাংসদ বলেন, এর সঙ্গে মোদি জমানার কোনও সম্পর্ক নেই। মোদি জমানায় চাকরির ক্ষেত্রে বরং মেয়েদের প্রতিনিধিত্ব কমেছে। ২০০৫ সালে দেশে ২৬ শতাংশ মেয়ে চাকরি করত, সে জায়গায় ২০২০ সালে সেই প্রতিনিধিত্ব কমে হয়েছে ১৬ শতাংশ। সুতযাং যারা প্রচার করছে ফৌজদারি আইনের ভয়ে নাবালক-নাবালিকা বিয়ে কমেছে তারা মিথ্যা প্রচার করছে। আইন দিয়ে কিছুই হয়নি। এদেশে ফিবছর ১ কোটি ২০ লক্ষ নাবালক-নাবালিকার বিয়ে হয়।
কেন্দ্র মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করার প্রস্তাব পাশ করায়, কেরলের বহু মসুলিম সংগঠন আপত্তি জানিয়েছে। মুসলিম লীগ নেতা ইটি মুহাম্মদ বসিরের অভিযোগ আসলে সবটাই করা হচ্ছে ছক কষে। আরএসএসের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে। মুসলিম পার্সোনাল ল’ এর বিরোধিতা করতে এবং অভিন্ন দেওয়ানি আইন সকলের ওপর চাপিয়ে দিতে এটা করা হচ্ছে।
মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড স্পষ্টভাবে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ এবং সম্পত্তির অধিকারকে সংজ্ঞায়িত করেছে । এই বিষয়গুলি মুসলিমদের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত। বশির যোগ করে বলেন যে তিনি এই বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি করতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলবেন। কংগ্রেস এখনও এই বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি।ওয়াইসি আরও বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহু স্টেটে ১৪ বছরেও বিয়ে হয়। ব্রিটেন এবং কানাডায় কেউ চাইলে ১৬ বছর বয়সেও বিয়ে করতে পারে। সে অধিকার তাদের রয়েছে।