স্টাফ রিপোর্টার, উদয়পুর, ১৮ ডিসেম্বর।। দিব্যাঙ্গজন সমাজের বোঝা নয়। একজন সুনাগরিকের কর্তবা দিব্যাঙ্গজন এবং বয়স্ক নাগরিকদের পাশে থাকা, তাদেরকে সাহায্য করা। এটা আমাদের নৈতিক কর্তব্য। একটু সুযোগ ও সহযোগিতা পেলে দিব্যাঙ্গজনেরাও অনেক কিছু করতে পারে।
তাই দিব্যাঙ্গন এবং বয়স্ক নাগরিকদের কাছে সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার কাজ করে চলেছে। আজ উদয়পুরের রাজর্ষি কলাক্ষেত্রে সামাজিক অধিকারিতা শিবিরের উদ্বোধন করে একথা বলেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক তথা প্রধান অতিথি সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি দিব্যাঙ্গজনদের সার্বিক উন্নয়নেও সরকার কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, দিব্যাঙ্গজনদের মধ্যেও প্রতিভা রয়েছে, তাদের সুযোগ করে দিলে তারাও নিজেদেরকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
তাই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাদের সাহায্য করার জন্য। প্রতিটি দিব্যাঙ্গজন যাতে কোন ভাবেই সরকারি সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন সেই দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিব্যাঙ্গজনদের কাছে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, বয়স্ক ও গুরুজনদেরকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস প্রদান করে তাদের চলার পথকে সুগম করা আমাদের কর্তব্য। তিনি বলেন, কোভিড চলাকালীন সময়ে দিব্যাঙ্গজনদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করা হয়েছে। গ্রামীণ ভারতবর্ষ হচ্ছে সবচেয়ে বড় ভারতবর্ষ। তাই গান্ধিজী বলেছেন ভারতবর্ষকে জানতে হলে গ্রামে যেতে হবে।
প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ভারতবর্ষের প্রত্যেকটি গ্রামকে শহরের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, মায়েদের হাতে রোজগার দেওয়ার জন্য স্ব-সহায়ক দল গঠন করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার গত চার বছরে ২৬ হাজার স্ব-সহায়ক দল গঠন করেছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার মিলিয়ে মোট ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে এই স্ব-সহায়ক দলগুলিকে।
তিনি বলেন, গ্রামের প্রত্যেক নাগরিককে আত্মনির্ভর করে তোলার জন্য কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার। উত্তর পূর্বাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং তা বাস্তবায়নের কাজ করে চলেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এখন প্রতিনিয়ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ণের কাজ পরিদর্শনে আসেন।
তিনি বলেন, বয়স্ক নাগরিদের কাছে রোজগার পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ বয়স্ক নাগরিককে নিয়ে স্ব-সহায়ক দল গঠন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, রাজ্য সরকার দিব্যাঙ্গজনদের এবং বয়স্ক নাগরিকদের কাছে সরকারি পরিষেবা প্রদানের কাজ করে চলেছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি স্বপন অধিকারী, বিধায়ক বিপ্লব কুমার ঘোষ, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক রঞ্জিত দাস, বিধায়ক অমল চন্দ্র ভৌমিক, উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন শীতল চন্দ্র মজুমদার, গোমতী জিলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবল দেবরায়, এলিমকো-র ম্যানেজার মুকেশ মিঞা, অরুণ কালরা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন গোমতী জেলার জেলাশাসক র্যাভেল হেমেন্দ্র কুমার। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিব্যাঙ্গজন এবং বয়স্ক নাগরিকদের হাতে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তুলে দেন উপস্থিত অতিথিগণ। যন্ত্রপাতিগুলির মধ্যে রয়েছে ট্রাই সাইকেল, হুইল চেয়ার, কানে শোনার যন্ত্র, ষ্টেচার ইত্যাদি।