স্টাফ রিপোর্টার, তেলিয়ামুড়া, ১৪ ডিসেম্বর।।শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম খাদ্যের জন্য প্রতিদিনই সংগ্রাম করতে হচ্ছে। একটা বাচ্চার সংগ্রাম। আর যখন আধ ভাঙ্গা হিন্দি ভাষার কন্ঠে একটাই শব্দ কানে পড়ল। ভাইয়া কম দামে লেলো দাও। দেখার কৌতুহল জাগলো।
দেখি তো গিয়ে বিষয়টি কি। দেখা গেল বাবার সাথে বসে ফুটফুটে একটি শিশু দা বিক্রি করছে। আর সবকিছুই পেটের তাগিদে।অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের জন্য চাই অর্থ, আর সেই অর্থ শ্রমের মধ্য দিয়েই অর্জন। অনেকে স্থানীয় জায়গায় কাজ আবার অনেকে নিজের ভিটে-মাটি করে পরিবার সমেত বহিরাজ্যে রোজগারের মাধ্যম কেই বেছে নেয়।
বিশেষ করে শীতের মৌসুমে যখন রোজগারের কোনো পথ খোলা থাকে না তখন পরিযায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেদের শিল্পকলা নিয়ে বহিরাজ্যের বিভিন্ন বাজার হাটে রোজগারের জন্য আসে। এমনই একটি চিত্র চোখ বন্দি হয় ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া মহাকুমার বিভিন্ন বাজার হাট থেকে।
পরিযায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেদের শিল্পকলাকে তুলে ধরেছে লোহার বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে। তবে এ বছর যে লাভের মুখ দেখবে না পরিযায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, এমনটাই দুঃখের সাথে জানালেন বহিরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি দল। দেশের মধ্যপ্রদেশের রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ত্রিপুরা রাজ্যে ব্যবসা করার জন্য এসেছে একাধিক পরিযায়ী শ্রমিকদের দল।
তারা তাদের শিল্পকলার মাধ্যমে লোহার বিভিন্ন জিনিস যেমন- দা, কুড়ুল, ক্ষন্তি, ছুরি সহ লোহার বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছে। রুটি রুজি রোজগারের জন্য এখানে আসা। বিগত বছর গুলোতে যেরকম চাহিদা ছিল লোহার তৈরি লোহার তৈরি জিনিসপত্রের বর্তমানে অনেকাংশেই কমে যাতে দিশেহারা পরিযায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
এই শীতের মৌসুমে যে অর্থ উপার্জন করে থাকে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে, তা দিয়েই তাদের সংসারের ভরণপোষণ। কিন্তু এবছর তারা লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা নিজেদের রোজকার খাওয়ার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে কষ্ট হচ্ছে বহির রাজ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের, ঠিক এমনটাই জানায় তাদের মধ্য থেকে একজন।
তারা আরো জানায় চড়া দামে স্থানীয় ভাঙ্গাড়গুলো থেকে লোহা ক্রয় করে, তারপর তারা সেগুলি দিয়ে লোহার বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করে থাকে। কিন্তু বাজারজাত করার পর বিক্রি করতে হচ্ছে খুবই কম দামে, যার ফলে চিন্তিত বহিরাজ্যের পরিযায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
এদিকে এই শীতের মৌসুমে তারা খুবই কষ্টে ত্রিপাল দিয়ে তৈরি করা তাবুর নিচে থাকেন নিজেদের পরিবারের কচিকাঁচা শিশু থেকে শুরু করে বয়জ্যেষ্ঠরা। কোথায় গেল কচিকাঁচা শিশুদের অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষা ব্যবস্থা? কোথায় গেল স্কুলের পঠন পাঠন? এমনটাই প্রশ্ন সমাজের বুদ্ধিজীবী মহলের।